বিএনপির দেওয়া ২৭ দফা রূপরেখায় সরকার ভয় পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। আজ মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এই দেশকে বাঁচানোর জন্য বিএনপি রূপ রেখা দিয়েছে, কিন্তু এই সরকার ও তার সহযোগিরা এটা ভালো চোখে দেখছে না। এই রূপরেখা দেখে সরকার ভয় পেয়েছে। কারণ রুপরেখা প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে গণতন্ত্র আসবে, দেশের মানুষের স্বাধীনতা আসবে। দুর্নীতিবাজ, হত্যা-লুণ্ঠনকারীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এজন্য তারা (আওয়ামী লীগ) রাষ্ট্র সংস্কারের ২৭ দফায় ভয় পেয়েছে।
দুদু বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯ মাস তিনি কারাবন্দি ছিলেন। তিনি তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। জীবনে কোনো নির্বাচনে হারেননি। সাংবিধানিকভাবে তিনি জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন। কিন্তু এখনো তাকে জামিন দেওয়া হয়নি। বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমি তার মুক্তির দাবি করছি । বিএনপির মহাসচিবসহ এ পর্যন্ত যারা আটক হয়েছেন গ্রেফতার হয়েছেন তাদের সবার মুক্তি দাবি করছি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে ২০১৪ ও ২০১৮ নির্বাচনের মাধ্যমে। বাঙালি অতিথিপরায়ন জাতি। এই দেশে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের গাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে এক রাষ্ট্রদূত গুম হওয়া এক পরিবারের বাসায় গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে তাতে পুরো বিশ্বে বাঙালি জাতির মাথা হিট হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, কোনো দল এত নিকৃষ্ট হতে পারে, এটা ভাবা যায় না। এখন তারা বলছে তারা এটা বুঝতে পারে নাই। বিএনপি কোন অবস্থায় আছে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত এখন বুঝতে পারবেন। আমেরিকা যদিও আগে সাতজনের নামে স্যাংশন দিয়েছিল। তবে এখন আরও ভালো করে বুঝবে দেশের পরিস্থিতি কি।
দুদু বলেন, দেশ ডিজিটাল করার নামে ১০ থেকে ১২ লক্ষ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে তারা (আওয়ামী)। সরকারি বা বেসরকারি এমন কোনো ব্যাংক নাই যেগুলো ফোকলা করে দেয়া হয়নি। ধ্বংস করে দেওয়া হয়নি। ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক ছিল সেই ব্যাংক কবে বন্ধ হয়ে যায় এরকম একটা পরিস্থিতিতে চলে গেছে। যারা সরকারের কাছে ঋণ দিতো তারা এখন সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট দেশ হবে। সে পর্যন্ত বাংলাদেশ থাকবে কিনা আমার সন্দেহ হয়। কারণ ১৪ বছরে দেশের যে অবস্থা করেছে। গণতন্ত্র হরণ করেছে, মানুষের বাক স্বাধীনতা নাই। পুলিশকে বিতর্কিত করা হয়েছে। সরকারি আমলাদেরকে বিতর্কিত করা হয়েছে। এমন কোনো সেক্টর নাই যে বিতর্কিত করা হয় নাই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে তারা চিরজীবন ক্ষমতায় থাকবে। এটা পাকিস্তানিরাও মনে করেছিল, কিন্তু তারা পরাজিত হয়েছে। এখন যারা মনে করছেন আজীবনের জন্য ক্ষমতায় থাকবেন তাদেরকে বলি গণতন্ত্র কখনো পরাজিত হয় না। গণতন্ত্রের কাছে কর্তৃত্ব বাদি শাসক সব সময় পরাজিত হয়। আপনি কি পরাজয়ের দিকে বর্তমান কর্তৃত্ব বাদি শাসকরা যাচ্ছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জিনাফ‘র সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মৎস্যজীবী দল নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
Array