যত্নের দিক দিয়ে পা-ই মনে হয় সবচেয়ে অবহেলিত অঙ্গ। মানুষ তার মুখের সৌন্দর্যের চিন্তায় যতটা সময় দেয়, পা নিয়ে ততটা নয়। ফলে পায়ের পাতা রুক্ষ হয়ে যায়, গোড়ালি ফেটে যায়। শীত এই সমস্যা আরো বাড়ে।
তবে একটু সচেতন হলে আর একটু বাড়তি যত্ন নিলে সারা বছরই পা কোমল ও সুন্দর থাকে।
যেকোনো রূপচর্চার প্রাথমিক কাজ হচ্ছে পরিষ্কার থাকা। বাইরে থেকে এসে অবশ্যই আগে নিজেকে পরিষ্কার করতে হবে। পায়ের ওপর ভর দিয়েই তো সারা দিন দৌড়াতে হয়। তাই পায়ের যত্ন নেওয়া উচিত সবার আগে। বাইরে থেকে এসে সবার আগে পানি দিয়ে ভালো করে পা পরিষ্কার করতে হবে। পায়ে ধুলাবালি বেশি লাগে, তাই শুধু পানি দিয়ে ধুলেই পায়ের সঠিক যত্ন হয় না। পায়ের যত্নেও কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
পায়ের যত্নে স্ক্রাবিং বেশ ভালো একটি উপায়। হালকা গরম পানিতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট লেবুর রস মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর খুব ভালোভাবে পা মুছে নিয়ে যেকোনো ভালো মানের ফুট স্ক্রাবিং দিয়ে কিছুক্ষণ ঘষে ঠাণ্ডা পানিতে পা ধুয়ে ফেলুন। যাঁরা আলাদা করে পায়ের জন্য স্ক্রাব কিনতে চাচ্ছেন না তাঁরা কিন্তু বাসায় থাকা উপাদান দিয়েই স্ক্রাব তৈরি করতে পারেন। এ জন্য লাগবে মোটা দানার চিনি, লেবুর রস, খাঁটি নারকেল তেল। এগুলো অল্প পরিমাণে মিশিয়ে দুই পায়ে লাগিয়ে নিন। চিনি যতক্ষণ না গলে যাচ্ছে ততক্ষণ হালকা হাতে ঘষতে থাকুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। ফুট স্ক্রাব ব্যবহারের উপকারিতা অনেক। ফুট স্ক্রাব পায়ের ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে পা সচল রাখতে সহায়তা করে। স্ক্রাবের সাহায্যে ফুট ম্যাসাজের ফলে আপনার শরীর ও মন রিফ্রেশ হয় এবং কাজের গতি বাড়িয়ে তোলে। ফুট স্ক্রাবের ফলে পায়ের ত্বকের ময়লা দূর হয়।
এরপর একটি প্যাক লাগাতে পারেন। এতে পায়ের রোদে পোড়া ভাব, শুষ্ক ভাব চলে যাবে, মরা চামড়া উঠে যাবে এবং পায়ের ত্বক মসৃণ ও সুন্দর থাকবে। বেসনের সঙ্গে মধু, হলুদ বাটা, অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে পায়ে ও গোড়ালিতে লাগান। ২০ মিনিট পর হালকা হাতে ঘষে তুলে ফেলুন। অনেকের পায়ের গোড়ালি ফাটা সমস্যা থাকে। এর জন্য পা ধুয়ে নারকেল তেলের সঙ্গে পেঁপে, কলা যেকোনো ফলের প্যাক তৈরি করে পায়ে লাগাতে পারেন। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করলে পায়ের গোড়ালি ফাটা সমস্যা দূর হয়।
পায়ের যত্নে কিছু টিপস
১. পায়ের যত্নে সপ্তাহে এক দিন পেডিকিউর করা উচিত। পার্লারে না যেতে পারলে বাসায়ই করা উচিত।
২. অনেকেই পায়ের চামড়া উঠলে টেনে তোলেন, যা ঠিক নয়। পায়ের চামড়া টেনে তুলবেন না।
৩. পায়ের পাতার ত্বক এমনিতেই শুষ্ক থাকে। শীতে আরো বেশি। বেশি শুষ্ক যেন না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন ।
৪. রাতে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর আগে পারলে একটু স্ক্রাবিং করে নিলে ভালো। এতে ত্বকের মরা কোষ উঠে যায়।
৫. পায়ের জন্য মোজা যেকোনো সময়েই বেশ ভালো। তবে যাঁরা গরমে এটা পরতে চান না তাঁরা চাইলে স্কিন মোজা পরতে পারেন। আর খুব ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পা সুতির পরিষ্কার মোজা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
৬. নিয়মিত অলিভ অয়েল ম্যাসাজে ত্বক ও নখ দুই-ই ভালো রাখে।
৭. শোবার সময় গোড়ালিতে ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে ম্যাসাজ করলে গোড়ালি ফাটার আশঙ্কা কমে যায়।
Array