জেলা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া/
কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় স্কুলশিক্ষিকা রোকসানা খানমকে (৫২) শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার দায়ে ভাতিজা নওরোজ জাবিদ নিশাতকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার (০৭ নভেম্বর) দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করলে রাতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
জানা গেছে, অনলাইনে জুয়া খেলতে নিষেধ করায় ফুফুকে হত্যা করে নিশাত। সোমবার সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাউজিং ডি ব্লক এলাকার ২৮৫ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষিকার নিজ বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নওরোজ জাবিদ নিশাত (১৯) কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা শহরের স্বর্ণকার পট্টি এলাকার মৃত টিপুর ছেলে। মাত্র চার বছর বয়সে নিশাতের বাবা মারা যায়। নিহত রোকসানা তার আপন ফুফু। তিনি নিঃসন্তান হওয়ায় নিশাতের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই নিশাতকে সন্তানের মতো লালন পালন করে বড় করেছেন।
রোকসানা ভেড়ামারা সরকারি গালস স্কুলের সাবেক সহকারী শিক্ষক মৃত রওশন আলীর বড় মেয়ে। তিনি কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক। তারা স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান যশোরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) চাকরি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, স্কুল শিক্ষিকা রোকসানা খানম নিঃসন্তান ছিলেন। তার স্বামী যশোরে সরকারি চাকরি করেন। তিনি সেখানেই থাকেন। ২০১৩ সালে ভাই মারা যাওয়ার পর নিশাতকে নিজের কাছে নিয়ে যায় এবং নিজের সন্তানের মতো লালনপালন করে বড় করেছেন।
লেখাপড়া না করে সে অনলাইনে জুয়া ও মাদক সেবন করত। এজন্য তাকে একটি মুদি দোকান করে দেন ফুফু। তারপরও সে অনলাইনে জুয়া ও মাদক সেবন করত। কিছু দিন আগে ফুফুর কিনে দেওয়া মোটরসাইকেল ১ লাখ ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। বিষয়টি নিয়ে রোববার ফুফু-ভাতিজার মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং ঝগড়া হয়। এতে নিশাত ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে ১টার দিকে শিল দিয়ে ঘুমন্ত ফুফুর মাথায় আঘাত করে হত্যা করে।
তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এস্টেট ডি ব্লক এলাকার ২৮৫ নম্বর ৬ তলা বিশিষ্ট বাড়ির মালিক নিহত রোকসানা। সেই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় তিনি বসবাস করতেন। আর চার তলায় বসবাস করতেন গ্রেপ্তার নিশাত। ওই বাড়ির নিচতলায় মুদি দোকানে ব্যবসা করত নিশাত। জিজ্ঞাসাবাদে ফুফুকে নির্মমভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে নিশাত। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেছেন।
Array