সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর হামলার পর তার দলের ডাক দেওয়া বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানজুড়ে চলছে ব্যাপক সহিংসতা। বড় বড় শহরগুলোতে তেহরিক-ই ইনসাফের কর্মীরা রাস্তা আটকে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে থেকে জানা যায়, কোথাও কোথাও তেহরিক-ই ইনসাফের কর্মীরা পুলিশের দিকে ইট পাথর ছুড়লে পাল্টা পুলিশও তাদের লক্ষ্য করে কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে; কোথাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াও হয়েছে।
কোয়েটায় মনন চকে পিটিআইয়ের বিক্ষোভে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের সাবেক ডেপুটি স্পিকার কাশিম সুরি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখানে বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
ইমরানের বিরুদ্ধে হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার বেলুচিস্তানজুড়ে ধর্মঘট পালিত হয়েছে। কিলা আব্দুল্লা, নুশকি, পাশিন, সানজাউয়ি ও অন্যান্য জেলায় দোকানপাট, মার্কেট বন্ধ ছিল বলে সুরি জানিয়েছেন।
দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদেও পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ করছেন। পেশওয়ার টোলপ্লাজার কাছে বিক্ষোভে সরকারবিরোধী স্লোগান শোনা গেছে।
করাচিতে ইমরানের সমর্থকরা রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। পরে তারা ইনসাফ হাউসের সামনে অবস্থান ধর্মঘটও করেন।
শেরা ফয়সাল এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসও ছুড়তে হয়েছে। এর জন্য পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) নিয়ন্ত্রিত সিন্ধু সরকার ও বিলাওয়াল জারদারিকে দায়ী করেছে পিটিআই।
লাহোরে পাঞ্জাব গভর্নর হাউসের বাইরে পিটিআইয়ের কর্মীরা টায়ার জ্বালিয়েছে। অনেক বিক্ষোভকারী গভর্নর হাউসে ঢুকে পড়তে ও সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙতেও চেষ্টা করেন বলে ডননিউজ টিভির ফুটেজে দেখা গেছে।
ফয়জাবাদে টোলপ্লাজার কাছে পিটিআইয়ের কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করলে পরে পুলিশও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। ফয়সলাবাদে বিক্ষোভে পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা ইমরানের ওপর হামলার স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন।
খাইবার পাখতুনখোয়ার শাংলা জেলায় রাস্তা দখল করে বিক্ষোভ হয়েছে; বিক্ষোভকারীরা আলপুরি, পুরান ও অন্যান্য এলাকা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে পাকিস্তানজুড়ে পুলিশ তাদের নেতাকর্মীদের ওপর সহিংসতা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পিটিআই।
ক্ষমতা হারানো ইমরান নতুন নির্বাচনের দাবি তুলে পাকিস্তানে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ লংমার্চের ডাক দেন। গত ২৯ অক্টোবর লাহোর থেকে শুরু হয় এই কর্মসূচি।
রাজধানী ইসলামাবাদের পথে চার দিন পর বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে সমাবেশের জন্য তৈরি হলে সেখানে হয় গুলিবর্ষণ।
সেখানে গুলিবিদ্ধ হন ইমরান খানও, তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে পরে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। গুলির ঘটনায় একজন নিহতেরও খবর পাওয়া যায়। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
Array