• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • বন্দর লইয়া অপরিণাম দর্শিতা কাম্য নহে! 

     বার্তা কক্ষ 
    17th Oct 2022 8:19 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    বন্দর হইল আমদানি-রপ্তানি তথা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের হার্ট বা অন্তর। ইহা বহির্বাণিজের উন্মুক্ত প্রবেশদ্বার, যাহা একটি দেশের ভিতরের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে জলে, স্থলে ও অন্তরীক্ষে সংযুক্ত থাকে।

    কানেকটিভিটি গড়িবার পাশাপাশি একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে বন্দরের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্থল, বিমান ও নৌবন্দর অর্থনীতির সমৃদ্ধিতে সমভাবে অবদান রাখে বটে, কিন্তু সেই আদি যুগ হইতে এই অত্যাধুনিক যুগেও এক নম্বর আসনটি দখল করিয়া রাখিয়াছে সমুদ্রবন্দর। সমুদ্রবন্দরকে সঠিকভাবে কাজে লাগাইয়া বহু দেশ উন্নতির সোপানে উন্নীত হইয়াছে।

    এই প্রশ্নে আমরাও এখন গর্ব করিবার মতো অবস্থায় রহিয়াছি। বিগত প্রায় দেড় দশককালে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলির উন্নয়নে মনোনিবেশ করিবার ফলে এই খাতে বেশ সুফল মিলিতেছে। বিশেষ করিয়া, বিশ্ববাণিজ্যের মঞ্চে বাংলাদেশকে নূতন করিয়া পরিচয় করিয়া দিয়াছে দেশের বৃহত্তম বন্দর—চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর।

    ভগ্নদশার উত্তরণ ঘটাইয়া ২০০৭ সাল হইতে এই বন্দর দিয়াই বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে প্রবেশ করিতে থাকে বিশ্ববাণিজ্যের হাটে। আমরা দেখিয়া আসিতেছি, বেসরকারি খাতে যাইবার পর হইতেই মূলত ঘুরিয়া দাঁড়াইতে শুরু করে এই বন্দর। বর্তমান সময়ে এই বন্দরে সাফল্যের জয়জয়কার। ২০২১ সালে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ১৩৪ বৎসরের রেকর্ড ভাঙিয়া নূতন রেকর্ড গড়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর হইতে রাজস্ব আয় ক্রমশ বাড়িতেছেই। ২০০৯ সালে বিশ্বের মধ্যে এই বন্দরের অবস্থান ছিল ৯৮তম, এখন ইহা ৬৪তম। ইহা ছাড়া এই বন্দরে জাহাজের গড় অবস্থান এখন মাত্র ৪৮ ঘণ্টা, যাহা পূর্বে ছিল ১০ হইতে ১২ দিন।

    সরকারি-বেসরকারি উভয় উদ্যোগের ফলে এই সাফল্য অর্জিত হইয়াছে। এরূপ সফলতার গল্প থাকা সত্ত্বেও এই বন্দরের কার্যক্রম বিদেশিদের হাতে ছাড়িয়া দেওয়া হইলে তাহা হইবে দুঃখজনক।

    চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন। দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় শতভাগ ইহার মাধ্যমে সম্পাদিত হইয়া থাকে। এই বন্দরের গুরুত্ব এতটাই বেশি যে, বিশ্বব্যাপী অতিমারি করোনা ভাইরাসের আক্রমণের মধ্যে বিশ্বের অনেক বন্দর বন্ধ থাকিলেও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখিবার স্বার্থে চালু রাখা হইয়াছিল এই বন্দর। যেহেতু লম্বা সময় ধরিয়া বন্দর ভালোমতোই চলিতেছে এবং গত এক দশকে দ্বিগুণেরও বেশি মুনাফা করিয়াছে; সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই বন্দরের ম্যানেজমেন্টে কোনো খামতি নাই বলিয়াই ধরিয়া লইতে হইবে। তথাপি হঠাত্ করিয়া বন্দরে বিদেশিদের ডাকিবার দরকার পড়িতেছে কেন, তাহা আমাদের বোধগম্য নহে।

    এই পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করিয়াছেন—একটি সম্পূর্ণ সচল বন্দরকে বিদেশিদের হাতে ছাড়িয়া দিলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা হাতছাড়া হইয়া যাইবে। এই প্রসঙ্গে আমাদের বক্তব্য হইল, খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের বশবর্তী হইয়া ভিনদেশিদের হাতে বাণিজ্যের এই ফুসফুসকে তুলিয়া দিলে তাহা হইবে ‘শরীরে ক্যানসারকে আমন্ত্রণ জানাইবার শামিল’। কোনো অবস্থাতেই ভুলিয়া গেলে চলিবে না, আমরা এমন এক যুগে বসবাস করিতেছি, যেইখানে প্রতিনিয়ত নূতন নূতন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সম্মুখে আসিয়া পথ আগলাইয়া দাঁড়াইতেছে। এই জন্য বড় অর্থনীতির দেশগুলিও পা ফেলিতেছে সন্তর্পণে।

    বঙ্গোপসাগরের সন্নিকটস্থ হওয়ায় এই বন্দরের ভূরাজনীতির জটিল  হিসাবনিকাশটিও মাথায় রাখিতে হইবে। এই পটভূমিতে দাঁড়াইয়া বাংলাদেশের মতো ভূ-কৌশলগত সুবিধাজনক অবস্থানের দেশগুলিকেও প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবার পূর্বে চুলচিরা বিশ্লেষণ করিতে হইবে। এসডিজি অর্জনে বন্দরের গুরুত্ব লইয়া কথা বলিতেছে স্বয়ং জাতিসংঘসহ জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলি। অর্থাৎ আগামী দিনগুলোতে বন্দরগুলি ব্যবহৃত হইতে পারে ‘তুরুপের তাস’ হিসাবে।

    নিকট অতীতের দিকে দৃষ্টি দিলে আমরা দেখিতে পাই, বন্দর লইয়া অপরিপক্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবার ফলে করুণ পরিণতি বরণ করিতে বাধ্য হইয়াছে কতিপয় দেশ। খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত লইয়া এখন হা-হুতাশ করিতেছে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ। সুতরাং, চট্টগ্রাম বন্দর লইয়া কোনো অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইবে না বলিয়াই আমরা বিশ্বাস করি।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    October 2022
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930
    31