• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে! 

     বার্তা কক্ষ 
    14th Oct 2022 6:54 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    ডেস্ক রিপোর্ট:

    বাংলাদেশে চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে এবং সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

    সাধারণত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গি বা প্রচলিত ভাষায় ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

    তবে এবারে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সংক্রমণের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী দেখা যাচ্ছে।

    সবশেষ দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড আট জনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭৬৫ জনের মতো।

    নতুন ধরণের প্রকোপ
    এবার যেসব রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন তাদের অধিকাংশ ডেন-থ্রি সেরোটাইপ বা ডেঙ্গুর ‘তৃতীয়’ ধরণে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবির।

    কোথাও কোথাও ডেন-ফোরের উপস্থিতও পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

    মূলত, যারা আগে এক বা একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা ডেন-থ্রি এবং ডেন-ফোরে আক্রান্ত হচ্ছেন।

    ফলে অনেক ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি জটিল রূপ নেয়ায় রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে।

    যারা মারা যাচ্ছেন তাদের বেশিরভাগও ডেন-থ্রি ও ডেন-ফোরে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

    একারণে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

    স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগে যেখানে ডেঙ্গু হয়নি সেখানেও এখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

    তাছাড়া হাসপাতালে আসা বেশিরভাগ রোগী আগেও এক বা একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিলেন। তাই এবারের লক্ষণগুলো প্রকট।

    তবে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে পরিস্থিতি সামাল দিতেই হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। কোন প্যানিক তৈরি করতে নয়।”

    স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “যেহেতু এটি নিয়মিত বাড়ছে কোনও রোগীকে যেন বিনা চিকিৎসায় বাড়ি ফিরে যেতে না হয় সেজন্য আমরা সরকারি হাসপাতালগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় জনশক্তি, বেড এবং লজিস্টিকস সাপোর্ট তৈরি রাখবে।”

    মৃত্যু বেশি প্রবীণ ও শিশুদের
    বাংলাদেশে সবশেষ ২০১৯ সালে এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল।

    চলতি বছর ১৩ই অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ২৩ হাজার ২৮২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং মারা গিয়েছেন ৮৩ জনের মতো। দেশের ৫০টি জেলাতেই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।

    ঢাকার পরে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা কক্সবাজারে।স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, এবারে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ২০ বছরের বেশি।

    মৃত্যু বেশি ৪০-৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে। মারা যাওয়া রোগীদের ৩৫% শিশু অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮ বছরের নীচে। আক্রান্ত রোগীকে দেরি করে হাসপাতালে নেয়ায় ভর্তির তিনদিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছেন অনেকে।

    ঢাকার বাইরেই বেশি মৃত্যু হচ্ছে। এছাড়া নারীদের মৃত্যুহার পুরুষদের তুলনায় বেশি।সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু সেরে যায়। তবে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

    এ ব্যাপারে মি. কবির প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, এবারের ডেঙ্গু রোগীরা বেশিরভাগ ডেঙ্গু শকে পরিণত হচ্ছে। এর ফলে দেখা যায় আক্রান্তের পাঁচদিন পর রোগী যখন মনে করে সে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে তখনই তাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। জ্বর যখনই কমে আসছে, রোগীর রক্তচাপও কমে যাচ্ছে। সে সময়ে ভালো চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।

    নতুন ডেঙ্গুর যেসব উপসর্গ
    ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হল শরীরের ভেতরে রক্তক্ষরণ হওয়া। অনেক সময় চোখের সাদা অংশে রক্ত জমাট হতে দেখা যায়।

    অনেক রোগীর মধ্যে শ্বাস কষ্ট, পেট ব্যথা, বমি, মল বা প্রস্রাবের সাথে এমনকি নাক মুখ থেকে রক্ত যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।এমন উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

    কী করছে সিটি করপোরেশন?
    ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু রোগী সবচেয়ে বেশি আসছে মিরপুর, উত্তরা ও মুগদা এলাকা থেকে। সেইসাথে ধানমন্ডি ও যাত্রাবাড়ী এলাকাকেও ডেঙ্গুর হটস্পট বলা হচ্ছে।ঢাকায় এই ডেঙ্গুবাহী এই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ মূলত দুই সিটি কর্পোরেশনের।

    এডিস মশা প্রজননের এই সময়কে সামনে রেখে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশেনের পক্ষ থেকে পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতা অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জোবায়দুর রহমান।

    তবে যেকোনো ভাইরাল রোগের পেছনে পরিবেশ ও জনসচেতনতার বড় ভূমিকা থাকায় শুধু সিটি করপোরেশনের পক্ষে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব বলে তিনি জানান।

    মি. রহমানের মতে, ডেঙ্গুর মতো একটা ভাইরাল রোগ শতভাগ নির্মূল করা যায় না। এটা থাকবেই।সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশ,থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্সও ডেঙ্গু পুরোপুরি নির্মূল করতে পারেনি।

    তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অনেক সময় পরিবেশই এই ভাইরাসগুলো সংক্রমণের সহায়ক হয়ে ওঠে। যেমন এবার চোখ ওঠা অনেক বেশি ছড়িয়েছে। সেখানে কারও হাত নেই।

    “তারপরও আমাদের পক্ষ থেকে যতোটা সম্ভব আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পরিচ্ছন্নতা অভিযানে আমাদের কর্মীরা মাঠে আছেন। আমাদের কাজে ঢিলেমি থাকলে ২০১৯ সালের সংখ্যাটা ছাড়িয়ে যেতো। কিন্তু তা হয়নি। কারণ আমরা কাজ করছি। কিন্তু মানুষকে সচেতন করার কাজটাই সবচেয়ে কঠিন।”ডেঙ্গু রোগবাহিত এডিস মশা যেহেতু পরিষ্কার ও স্থির পানিতে জন্মায় সেক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতাই প্রধান সমাধান বলে তিনি জানান।

    মূলত যেকোনো স্থানে বৃষ্টির জমা পানি বা টানা কয়েকদিন জমিয়ে রাখা পরিষ্কার পানি, ছাদে বা বারান্দায় গাছের টব,পাত্র কিংবা নারিকেলের খোল, টায়ার জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে বংশ বৃদ্ধি করে এডিস মশা।তাই মানুষ সচেতন না হওয়া পর্যন্ত ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মি. রহমান।

    “আমরা মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং করছি, লিফলেট দিচ্ছি, স্টিকার লাগিয়েছি, টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিয়েছি, ইমামের মাধ্যমে মসজিদে প্রচার করছি। এতে কিছু মানুষ সচেতন হয়েছে। আবার কিছু মানুষ একদমই সচেতন হয়নি। যার কারণে এই প্রকোপ বাড়ছে।”

    পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে
    ডেঙ্গু আগে শুধু ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী শহর কেন্দ্রিক রোগ হলেও এখন এটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে যেখানে উন্নয়ন কাজ ও নির্মাণ কাজ চলছে।

    সেক্ষেত্রে দেশজুড়ে সামগ্রিক কর্মকৌশল প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বেনজির আহমেদ।
    ডেঙ্গু প্রতিরোধে এই কর্মকৌশল শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক নয় বরং যেখানে নগরায়নের বৈশিষ্ট্য আছে যেমন দেশটির সাড়ে তিনশ পৌরসভায় এই কার্যক্রম চালাতে হবে।

    এজন্য প্রতিটি পৌরসভায় কীটতত্ত্ববিদ এবং মশা নিধনে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, ওষুধ সরবরাহ করার কথা জানান তিনি।এখনই ব্যবস্থা না নিলে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

    বিশেষ করে বৃষ্টিপাত যদি আরও দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয় এবং থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ে তাহলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চলতি বছরের শেষ সময় পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে তিনি বলেন।

    “এখন থেকেই যদি ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে সামনের দিনগুলোতে আমাদের একটি জটিল ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পার। তাই সরকারের উচিত অন্যান্য সংক্রামক রোগের মতো ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কর্মকৌশল হাতে নেয়া।”

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    October 2022
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930
    31