জবি প্রতিনিধি:
গত জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দেশজুড়ে দৃশ্যমান পরিবর্তন এলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিচারে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ক্যাম্পাসে এখনও টিকে আছেন সেই সময়কার শিক্ষক, কর্মকর্তা ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা, যাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
ক্যাম্পাসে অসন্তোষ:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মধ্যে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ:
শিক্ষার্থীরা মনে করেন, আন্দোলনের বিজয়ের পরও ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিচারের অভাবে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হচ্ছে। তাদের প্রশ্ন, “বিজয়ের পরও কেন ক্যাম্পাসে আমরা ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছি?”
তদন্ত কমিটির কার্যক্রম:
জবি প্রশাসন গত ১৭ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে একটি কমিটি গঠন করে, যার আহ্বায়ক বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া এবং সদস্য সচিব প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক। কমিটিকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো প্রতিবেদন জমা পড়েনি।
কমিটির আহ্বায়ক ড. মঞ্জুর মুর্শেদ বলেন, “আমাদের অন্যান্য কাজের চাপে এই তদন্ত কার্যক্রমে যথাযথ সময় দেওয়া সম্ভব হয়নি। কাজটি অত্যন্ত জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। কমিটির কাজ সঠিকভাবে শেষ করতে না পারলে পদত্যাগ করতেও প্রস্তুত আছি।”
কমিটির সদস্য সচিব ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তবে তা এখনও দৃশ্যমান নয়। আশা করছি শিগগিরই কাজটি সমাপ্ত হবে।”
উপাচার্যের দুঃখপ্রকাশ:
জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম কমিটির অগ্রগতির অভাব নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। এটি দুঃখজনক এবং আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।”
জবি ছাত্রশিবির সভাপতি আাসাদুল ইসলাম বলেন,” তিন মাস পূর্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে এখনও দৃশ্যমান কোনো কাজ না করায় আমাদের কাছে দু:খজনক। আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য প্রশাসন দ্রুত এই বিষয়ে কাজ করবেন।”
জবি ছাত্রদলের আহবায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন,” আমরা এই ক্যাম্পাসে দ্রুত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিরোধীদের বিচার চাই এবং আমরাই নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়তে চাই।”
জবি প্রশাসনের গড়িমসির কারণে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারে বিলম্ব হচ্ছে, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য হতাশাজনক। দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।
Array