যশোর জেলা প্রতিনিধি:
পাঁচ বন্ধু দুই মোটরসাইকেলযোগে ঝিকরগাছার গদখালীতে ঘোরার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। এর মধ্যে দুই বন্ধু বাড়িতে ফিরলেও তিন বন্ধু ফিরেছে লাশ হয়ে।
শুক্রবার (০৭ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে ঝিকরগাছা থেকে ফেরার পথে নতুনহাট স্টোন ভাটার সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অজ্ঞাত পরিবহনের চাপায় আসিফ (১৯) ও আরমান (১৯) নামে দুই বন্ধু নিহত হন। অপর বন্ধু সালমানকে (২০) স্থানীয়রা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন- যশোর সদরের এড়েন্দা গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে আসিফ (১৯), দুর্গাপুর গ্রামের নাজির আলীর ছেলে আরমান (১৯) ও একই গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে সালমান হোসেন (২০)। নিহত আরমান ও সালমান নতুনহাট পাবলিক কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র এবং আসিফ বাড়ির পাশে বাজে দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে আর পড়াশোনা করেননি।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভিড় জমান। পরিবারের সদস্যদের আর্তচিৎকারে হাসপাতাল এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
শুক্রবার রাত ১টার দিকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তিন বন্ধুর মরদেহ দুর্গাপুর ও এড়েন্দা গ্রামে নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার ভোর হতে না হতেই নিহতদের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং এলাকাবাসীর ঢল নামে।
সরেজমিনে শনিবার সকালে দুর্গাপুর গ্রামে দেখা যায়, পাশাপাশি চারটি বাড়ির মধ্যে দুটি বাড়ির মধ্যে উঠানে খাটিয়ায় রাখা ছিল দুই বন্ধুর মরদেহ। অন্যদিকে পাশ্বর্বর্তী এড়েন্দা গ্রামে নিজ বাড়ির উঠানে রাখা ছিল অপর বন্ধু আসিফের মরদেহ। সালমানের মা কিছুক্ষণ পর পর হারিয়ে ফেলছেন জ্ঞান। অন্যদিকে সালমানের বাবা আলমগীর হোসেন ছেলেকে হারিয়ে আহাজারি করছিলেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সালমানের বাবা বলেন, কিছু দিন ধরে আমার ছেলে খারাপ সঙ্গে ঘোরাফিরা করছিল। আমি বাইরে কাজে ব্যস্ত থাকায় ছেলেকে শাসন করতে পারিনি। যার ফলে আমার আজ এই পরিণতি। কোনো বাবা যেন এমন ভুল না করে।
তিনি গ্রামবাসীর প্রতি অনুরোধ করে বলেন, কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের হাতে যেন মোটরসাইকেল তুলে না দেওয়া হয়। তাহলে আমার মতো আপনাদেরও একদিন সন্তান হারানোর বেদনা ভোগ করতে হবে। অন্যদিকে আসিফ ও আরমানের বৃদ্ধ বাবা কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
Array