ব্রাজিলের চারটি বিশ্বকাপ জয়ে অবদান রাখা কিংবদন্তি মারিও জাগালো মারা গেছেন জানুয়ারির শুরুতে। কিন্তু তার মৃত্যুর মাস না পেরোতেই সম্পত্তির ভাগ পাওয়া নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছেন সন্তানরা। যার সমাধান পেতে ইতোমধ্যে তারা আইনি লড়াইও শুরু করেছেন। এক সন্তানের জন্য সম্পত্তির অর্ধেকাংশ বরাদ্দ করে, বাকি অর্ধেক সম্পত্তি তিন সন্তানের জন্য লিখে যাওয়ায় এই বিপত্তি! ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ও গ্লোবো এই তথ্য জানিয়েছে।
ও গ্লোবো বলছে, জাগালো সম্পদের ৫০ শতাংশ দিয়ে গেছেন ছোট ছেলে মারিও সিজার ও তার পরিবারকে। দীর্ঘদিন ধরে জাগালো মারিও সিজারের সঙ্গেই থাকতেন। বাকি সন্তানরা সেভাবে দেখভাল করেননি বলেই তাদের সবার জন্য বাকি ৫০ শতাংশ রেখে গেছেন বলে লিখেও রেখেছেন জাগালো। যা নিয়ে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন ওই তিন সন্তান।
খেলোয়াড়–কোচ উভয় ভূমিকায় প্রথম হিসেবে বিশ্বকাপজয়ী জাগালো দলিলে লিখে গেছেন, ছোট ছেলে মারিও সিজার তাকে দেখভাল করলেও, অন্য তিন সন্তান তার সম্পত্তি থেকে প্রয়াত মায়ের ভাগ বাদ দিতে উঠেপড়ে লেগেছিল। এ নিয়ে তাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন জাগালো। তবে পাওলো হোর্হে, মারিয়া এমিলিয়া ও মারিয়া ক্রিস্তিনা দলিলে লেখা বাবার দাবি নাকচ করেছেন।
তাদের আইনজীবী আনেলিসা তেক্সেইরা ও দানিয়েল ব্লাঙ্ক জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল থেকে পাওলো, এমিলিয়া ও ক্রিস্তিনা তাদের বাবার সঙ্গে যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেও পারেননি। ৯ জানুয়ারি, অর্থাৎ জাগালোর মৃত্যুর চার দিন পর তারা সম্পত্তির দলিল খোলা ও তা কার্যকর করার অনুরোধ জানান। কিন্তু দলিলে তারা দেখতে পান, জাগালো সন্তানদের মধ্যে সম্পত্তি সমানভাবে বণ্টন করেননি। এরপরই নতুন করে পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়।
ব্রাজিলের আইন অনুযায়ী— ছেলে কিংবা মেয়ে, প্রত্যেক সন্তান মৃত বাবার সম্পত্তির সমান ভাগ পাবে। তবে কোনো বাবা চাইলে তার সম্পত্তির সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক একজন সন্তানকে দিতে পারেন। আইন অনুযায়ী, জাগালো সেটাই করেছেন। ‘গ্লোবো’ জানিয়েছে, ছোট ছেলে মারিও সিজারকে দিয়েছেন সম্পত্তির ৫০ শতাংশ। তবে সিজারের দাবি, তার বাবা পাওলো, এমিলিয়া, ক্রিস্তিনার ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন বলে কোনো সম্পত্তি দিতে চাননি। তবে সেটা আইনের পরিপন্থী হওয়ায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে তাকে সরে আসতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি ৯২ বছর বয়সে মারা যান মারিও জাগালো। ১৯৫৫ সালে তিনি বিয়ে করেন আলসিনা দি কাস্ত্রোকে। এই দম্পতির চার সন্তান—দুই ছেলে পাওলো হোর্হে ও মারিও সিজার এবং দুই মেয়ে মারিয়া এমিলিয়া ও মারিয়া ক্রিস্তিনা। ২০১২ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান জাগালোর স্ত্রী আলসিনা। মৃত্যুর আগে সর্বজনীন উত্তরাধিকার হিসেবে চার সন্তানের প্রত্যেককে ৫ লাখ ব্রাজিলিয়ান রিয়াল (১ কোটি ১১ লাখ টাকা) করে দিয়ে যান আলসিনা।
Array