রাহাত হোসেন, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পতাকা উত্তোলন শেষে সকালে উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর চত্বর থেকে আনন্দ র্যালী শুরু হয়। র্যালীতে শিক্ষক,শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। আনন্দ র্যালীতে অংশগ্রহণকৃত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে নিজ নিজ ফ্যাকাল্টি ও ডিপার্টমেন্টকে তুলে ধরেন।
র্যালীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন,একাডেমিক ভবন, প্রধান ফটক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গা প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর চত্বরে শেষ হয়।
এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর চত্ত্বরে বেলুন উড্ডয়ন ও শান্তির দূত পায়রা অবমুক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এম কামরুজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ডীন,ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান, শিক্ষকমণ্ডলী,কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এরপর শহীদ মিনারের সম্মুখে দিনব্যাপী ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির উদ্ভোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. কামরুজ্জামান বলেন, “১৯৯৯ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২৫ তম বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পদার্পণে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার প্রকৌশলীদের। তাঁরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী যারা শিক্ষা, জ্ঞান এবং গবেষণায় ২৪ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আজকের বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের যে গতিধারা অব্যাহত রয়েছে তার প্রতিফলন আমরা দেখতে পারবো বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ তম বা ৭৫ তম পদার্পণে।”
এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নানা আয়োজনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত সম্পৃক্ততায় মুগ্ধ হয়ে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই যুগের পথচলায় প্রথমবারের মতো স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট ক্রীড়া শৈলী প্রতিপাদ্যে ‘রোলার স্কেটিং প্রদশনী’র আয়োজন করা হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী তাদের স্কেটিং এর মাধ্যমে স্মার্ট ক্রীড়া শৈলী প্রদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ ও প্রধান গেট উন্মুক্ত স্থানে। রোলার স্কেটিং শেষে একই স্থানে ফ্লাশ মুভ অনুষ্ঠিত হয়। ‘অগ্রযাত্রায় হাবিপ্রবি’র ২৫ বছরে পদার্পণ’ শিরোনামে ফ্লাশ মুভটিতে অংশগ্রহণ করেন হাবিপ্রবির অর্ক সাংস্কৃতিক জোটের একদল শিক্ষার্থী। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
এছাড়া বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দোয়ার আয়োজন করা হয়। উক্ত দোয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য সফলতা কামনা করা হয়। দোয়া করা হয় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ও তেভাগা আন্দোলনের পথিকৃৎ হাজী মোহাম্মদ দানেশ ও তাদের পরিবারের জন্য।
বিকেলে আবারও একাডেমিক ভবন-১ ও প্রধান গেট উন্মুক্ত স্থানে সেঁজুতি সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে নৃত্য-গানে অগ্রজ-অনুজদের মধ্যে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর টিএসসির সামনে মুক্তমঞ্চে হাবিপ্রবিবিষয়ক তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
Array