শাহনেওয়াজ পাপ্পু, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রীহল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রলীগ নেত্রীর নামে অভিযোগ এসেছে। গতকাল মধ্যরাতে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম ফরাজীর নারী কর্মী নিপুণ, স্বর্ণা ও যুথীসহ কয়েকজন হলের মেয়েদের ডেকে হেনস্তা করে এবং কেন তারা নিয়মিত ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করে না এ নিয়ে শাসায়। যাদের একজনকে স্বর্ণা চড় দেয় এবং অন্য একজন এসব ঘটনা দেখে রাতে অজ্ঞান হয়ে যায়।
সূত্র থেকে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ তম আবর্তনের ছাইরা ছামছি নিপুণ ও নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটওয়ারি নামের ২ শিক্ষার্থী গতকাল(১১মার্চ) রাতে ১৪ তম আবর্তনের ২ শিক্ষার্থী আদরী আক্তার(১৩০১ নং কক্ষ) ও শাহনাজ খাতুন (১২১১ নং কক্ষ) কে তাদের রুমে ডাকে রাত সাড়ে বারোটার পর। এছাড়াও অন্য এক প্রিয়াঙ্কা নামের ১৭ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীকে তারা রুমে ডাকে।
ঘটনা দুইটি ভিন্ন সময়ে ঘটে যেখানে প্রিয়াঙ্কাকে চড় মারা হয় আর অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এ ঘটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্ভূত কাউকে টাকা দেওয়া নিয়ে কথা হয়েছিলো তা জানা গেছে।
পরবর্তী ঘটনাটি এমন ছিলো যে, আদরী ও শাহনাজের পরীক্ষা চলায় তাদেরকে ডাকলেও তারা সঙ্গে সঙ্গে যেতে পারে নি। বেশ কিছুক্ষণ পরে যায় আর তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুনতে হয়। পেতে হয় হল ছাড়ার হুমকি।
তারপর যখন রুমে যায় তখন শাহনাজ ও আদরী তাদের রুমে গিয়ে কান্না করতে থাকে। এক পর্যায়ে আদরী অজ্ঞান হয়ে যায়। তাদের রুমমেটদের থেকে এ বিষয়ের সত্যতা পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে আদরী জানায়, গতকাল রাতে আমাদেরকে ১২ টা ৩০ এ আপুরা তাদের রুমে ডাকে। আমদের পরীক্ষার কারণে পড়া থেকে উঠে যেতে একটু দেরী হলে ওনারা আমাদেরকে অনেক গালিগালাজ করেন। আমাদেরকে আগামী মাসের এক তারিখে হল থেকে নেমে যেতে বলেন। ছাত্রলীগের এক বড়ভাই এর নাম করে ওনারা বলেন, ওনাকে বলতে অন্য সীট দেখতে নয়তো বাসা দেখে দিতে। কিন্তু আমরা হলে থাকি নিজের লিগ্যাল সীটে। আমাদের কার্ডও আছে।”
এ বিষয়ে ১৩ তম আবর্তনের নিপুণ এর সাথে যোগাযোগ করলে উনি জানান, এ রকম ঘটনা ঘটে নি। বিষয়টা এমন ছিলো না।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো ইব্রাহিম ফরাজীর সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি জানান, আসলে বিষয়টা এমন না। স্বর্ণা এর নাম করে চাওয়ায় প্রিয়াঙ্কা মেয়েটি কবি নজরুল ইসলাম কলেজ এর এক ছেলেকে দশ হাজার টাকা দিয়ে দেয়। তাই স্বর্ণা কেবল ওকে ছোটবোন হিসেবে শাসন করে। আর কিছু না।” তবে আদরী আর শাহনাজ এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়টি আমি জানি না। তবে আমি দেখছি কি করা যায়।
ছাত্রীর অজ্ঞান হয়ে যাওয়া আর গতকাল রাতের কোনো ঘটনা সম্বন্ধেই অবগত ছিলেন না হল প্রভোস্ট। আজ ১২ মে ২০২৩ দুপুরে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমি জানি না। কিন্তু যেহেতু আমি এটা জানলাম এ ব্যাপারে আমি জরুরি পদক্ষেপ নিবো। মেয়েদেরকে হল থেকে নামানোর কোনো অধিকার তাদের নেই। তারা এমন কথা কেন বলবে সেটা আমি জানতে চাইবো। আমি রবিবার সামনাসামনি ওদেরকে ডেকে এর সমাধান করবো।
উল্লেখ্য, স্বর্ণার নামে হলে সিট পাইয়ে দেওয়ার নামে সিটপ্রতি দশহাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগও আছে। তাদের দাবি ছাত্রলীগের নামে তারা সিট পাইয়ে দিলে মেয়েদের অবশ্যই ছাত্রলীগের প্রোগাম করতে হবে নতুবা সিট ছেড়ে দিতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন তবে হল প্রভোস্টের দায়িত্ব কী? এমন হল প্রভোস্টের কাছে মেয়েরা কতটা নিরাপদ?
Array