ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়োগে লাখ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়। প্রতিটি নিয়োগে ৫০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা নেয় হাসপাতালের একটি সিন্ডিকেট।
বুধবার (১০ মে) এ অভিযান পরিচালনা করেছে দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি টিম। সংস্থাটির (জনসংযোগ) কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আরিফ সাদেক অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়োগের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সেখানকার ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম। অভিযানে হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগে কর্মরত পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ওয়ার্ড বয়, আয়া, নিরাপত্তা প্রহরী ও সেবা প্রার্থীদের বক্তব্য নেওয়া হয়।
সূত্র আরও জানায়, সেখানে কর্মরত কর্মচারীদের বক্তব্য অনুযায়ী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ওয়ার্ড বয়, আয়া, নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে নগদ টাকা নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার। তার রুম তল্লাশি করে বেশ কিছু ফাইল পাওয়া যায়। যার মধ্যে বেশ কয়েকজন আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত ফাইল পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিভিন্ন আবেদনকারীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার। ঘুষের টাকাগুলো তিনি গলফ সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেডের কর্মকর্তাদের দিয়েছেন বলে জানান। কিন্তু টাকা নিয়েও তার সুপারিশ করা আবেদনকারীদের নিয়োগ দেননি তারা। তাই বর্তমানে আবেদনকারীদের টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে দুদক টিমের কাছে দাবি করেন ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই ওয়ার্ড মাস্টার জানান, হাসপাতালে বিনা বেতনে কাজ করছেন প্রায় ৯০ জন কর্মচারী। সে কারণে হাসপাতালটিতে সেবা নিতে আসা রোগীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে ট্রলি ভাড়া নিয়ে থাকেন এসব কর্মচারীরা। এছাড়া মর্গ থেকে মরদেহ নিতে আসা স্বজনদের কাছ থেকে চার হাজার বা পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়ে থাকেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় রোগীদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান। সম্প্রতি আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া প্রথম শিফটে কর্মরত অধিকাংশ কর্মী স্বীকার করেন, নিয়োগ পেতে গলফ সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেডকে ৫০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা দিতে হয়েছে তাদের।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানে হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রাথমিকভাবে সত্যতা মিলেছে।
Array