গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশের নবনির্বাচিত ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এর আগে টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে পদ্মা সেতুতে নেমে পরিবারের সঙ্গে ছবি তোলেন তিনি।
এসময় রাষ্ট্রপতিকে তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সমাধি কমপ্লেক্সে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি। পরে রাষ্ট্রপতি পবিত্র ফাতেহাপাঠ করে বঙ্গবন্ধু, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের শহীদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করে টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যাবেন। পরে বিকেলেই সড়কপথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। বিকালে সড়ক পথে তার বঙ্গভবনে ফেরার কথা রয়েছে।
এদিকে রাষ্ট্রপতির সফরকে কেন্দ্র করে জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে ধোয়া-মোছাসহ এর উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়। সেই সঙ্গে সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সসহ আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গত সোমবার বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই পদে নির্বাচিত মো. সাহাবুদ্দিন। সদ্য সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের উত্তরসুরী মো. সাহাবুদ্দিনের রয়েছে আইন পেশা, বিচারালয় ও দুদকে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা। বিভিন্ন মহলে ডাকনাম চুপ্পু হিসেবে তিনি বেশি পরিচিত।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বঙ্গভবনে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রীয় সালাম ও গার্ড অব অনার দিয়েছে গার্ড রেজিমেন্টের একটি দল। এরপর গার্ড পরিদর্শন করেন তিনি। বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটি ছিল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতিকে বরণ করে নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা।
রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহউদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন, সচিব (সংযুক্ত) ওয়াহিদুল ইসলাম খানসহ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মো. সাহাবুদ্দিন। আর কোনো প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
পাবনার সন্তান মো. সাহাবুদ্দিনের জন্ম ১৯৪৯ সালে। ছাত্রজীবনে তিনি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে এলএলবি ও বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাহাবুদ্দিন ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান রাষ্ট্রপতি। এরপর দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। পরে তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নিবরে দাঁড়িয়ে থাকেন।
Array