কলাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর মহিপুরে জনসম্মুখে শিক্ষক কর্তৃক মারধরের শিকার হয়েছে চায়না প্রজেক্টের দুই কর্মচারী।
মঙ্গলবার (১৪ফে ব্রুয়ারী) সকাল আনুমানিক ১০টার সময় মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউপির ২নং ওয়ার্ডস্থ হোটেল রোমান সংলগ্ন বেড়িবাঁধ উপর এ ঘটনা ঘটে।
নজরুল মাস্টার নামের এক প্রাইমারী স্কুল শিক্ষকের হাতে মারধরের শিকার হয়েছে রাসেল(৩০) ও সোহেল নামের দুই সাইড ম্যানেজার। যা ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগে ভাইরাল।
রাসেল ও সোহেল জানান নজরুল মাস্টার আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আমরা সেটা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমাদের ওপর চড়াও হয়ে অতর্কিত ভাবে আমাদের মারধর করে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সাব কন্টেক্টার মো.জামাল সরদার বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে চায়না প্রজেক্টে (সিকো) কোম্পানি থেকে সাব কন্টাকে নিয়ে আলীপুরের বেড়িবাঁধ প্রজেক্টের কাজ করে আসছি। যার তদারকি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু নজরুল মাস্টার নামের এক ব্যক্তি আমার কাজে বিভিন্ন সময় বাঁধা বিঘ্ন সৃষ্টি করে। বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবি করে। আমার সেচ পাম্প ভেঙে ফেলে।বেকু মেশিন বন্ধ সহ বিভিন্ন ভাবে আমাকে হয়রানি করে আসছে।
আজ মঙ্গলবার আমার সাইড ম্যানেজার রাসেল ও সোহেল কে কাজ করতে বাঁধা দেয়, এবং তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে এবং প্রকাশ্যে তাদের মারধর করে। এবং মামলার হুমকি দেয়। যা ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে আছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান ইউপি সদস্য মো.আবুল হোসেন কাজী বলেন, গাছ নিয়ে যে ঝামেলা হয়েছে সেটা আমি সমাধান করে দিয়েছি, গাছ আমার জিম্মায় আছে। তবে মারামারি ঘটনা কি নিয়ে সেটা আমি সঠিক জানিনা, তবে শুনেছি ঘর সরানো নিয়ে নাকি!!
পাউবোর ইঞ্জিনিয়ার মো.মনিরুল ইসলাম জানান, বেড়িবাঁধের সাইডে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন যে গাছ ও ঘরগুলো আছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সেগুলো সরাতে ও কাঁটতে বলায় নজরুল মাস্টার নামের এক ব্যক্তি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। আমি তাকে বল্লাম বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য গাছ এবং ঘরগুলো সরাতে হবে। একপর্যায়ে ইউপি সদস্য কে ডেকে আমরা গাছ কেটে তার জিম্মায় রেখে আসি। এবং যে গাছের সঠিক দাবিদার তাকে হস্তান্তর করতে বলি। এভাবে গাছে কাটতে পারলেও কোনো ভাবেই সরাতে পারিনি ঘর।
সেলিম নামের এক ব্যক্তির কাছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি নজরুল মাস্টার ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যেখানে সেলিমের ঘর রয়েছে। সেলিমকে ঘর সরাতে নির্দেশ দিলে সে বলে আমার জমি কেনার ৮০ হাজার টাকা না পাইলে আমি ঘর সরাবো না। যেটা আমাদের বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার কাজে বাঁধা সৃষ্টি হয়।
লতাচাপলী ইউপির চেয়ারম্যান জনাব আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, নজরুল মাস্টার উশৃংখল প্রকৃতির লোক, কিছুদিন আগে তার স্ত্রী সাবেক সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য তাকে জনসম্মুখে মারধর করেছে তিনি।
নজরুল মাস্টার শারীরিক মানসিক ভাবে অনেকটা অসুস্থ, তার কর্মকান্ড আমরা মোবাইলে দেখেছি, তার ভূমিকা আচার-আচরণ যেটা শিক্ষক সমাজের জন্য মানহানিকর।
তিনি মাস্তানের ভূমিকায় ছিলেন।
তিনি আরও বলেন একজন শিক্ষক যদি এই প্রকৃতির হয়। সে ছাত্র ছাত্রীদের কি শিক্ষা দেয় সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল মাস্টারের স্ত্রী নার্গিস বেগম বলেন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন আমি দূর থেকে দেখি আমার স্বামীকে কয়েকজন মিলে মারধর করতেছে। আমি কাছে এসে থামানোর চেষ্টা করলে তারা আমাকেও মারধর করেন। মারধরে সে অসুস্থ হয়ে পরে, বর্তমানে সে হসপিটালে ভর্তি রয়েছে।
Array