করোনা মহামারী চলাকালীন একসঙ্গে পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়। গোপনে ওই পাঁচ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে শপথও নিয়েছিলেন। তিনি হলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
মন্ত্রিসভা থেকে শুরু করে পার্লামেন্ট— কেউই জানতে পারেনি তার এই গোপন শপথের কথা। সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপরই তোলপাড় শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি প্রকাশ প্রকাশ্যে এনেছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ।
আলবানিজ জানিছেন, তার পূর্বসূরি যে কাজ করেছেন তা অবৈধ না হলেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নজিরবিহীন তো বটেই। তাই এ নিয়ে আরও বিশদে তদন্ত চালাতে চান তিনি।
তিনি বলেন, “আজ আমি ঘোষণা করলাম যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কীভাবে গোপনে একাধিক মন্ত্রণালয়ে নিজেকে নিয়োগ দিয়েছিলেন সে বিষয়ে তদন্ত করতে মন্ত্রিসভা সম্মতি দিয়েছে। আমাদের গণতন্ত্র মূল্যবান। অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দায়ী কে তা জানার অধিকার রাখে।”
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “কেউ যদি না জানেন, কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কে রয়েছেন, তাহলে সেই মন্ত্রণালয়ের কোনও সিদ্ধান্তের জন্য কাকে দায়ী করা হবে সেটা মানুষ জানবেন কী করে?”
মরিসন গোপনে যে মন্ত্রকগুলোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্তত তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী অন্তত সপ্তাহখানেক আগে পর্যন্ত জানতেন না যে মরিসনই কার্যত সেই মন্ত্রকগুলো চালাচ্ছেন। সেগুলি হল- অর্থ, স্বরাষ্ট্র এবং রাজস্ব মন্ত্রণালয়। এছাড়াও স্বাস্থ্য এবং শক্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় তিনিই চালাচ্ছিলেন।
মে মাসে নির্বাচনে হেরে লিবারাল পার্টির প্রধান হিসেবে সরে দাঁড়ান মরিসন। আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, কোভিড মহামারী চলাকালীন গোটা বিশ্বের মতো তার দেশও এক নজিরবিহীন সংকটের মুখে দাঁড়িয়েছিল। তাই সব সিদ্ধান্তের দায়ভার নিজের কাঁধে নেওয়ার জন্যই ওই সব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তিনি নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন।
সূত্র: এবিসি এইউ, দ্য অস্ট্রেলিয়ান, এসবিএস নিউজ, নাইন নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান
Array