আরিফ মাহমুদ, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সমশের আলী (৮০) নামে এক বৃদ্ধর মাথায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বালিয়াডাঙ্গীর দুওসুও ইউনিয়নের সাধুবান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ওই বৃদ্ধ ওই এলাকার মৃত বসির মুন্সির ছেলে। তিনি সাধুবান্ধা পুকুরপাড়ের গুচ্ছগ্রামে বসবাস করতেন।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সকালে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশী খমির উদ্দীনের ছেলে রহিম উদ্দীনের সঙ্গে সামশুল হকের লোকজনের মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় সামশুল হকের সমর্থক ছয়-সাতজন গুরুতর আহত হন। তাঁরা ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনার পর একই দিন দিবাগত রাতে রহিম উদ্দীন ও তাঁর সমর্থক সাত-আটজন লোক এসে সামশুল হককে খোঁজাখুঁজি করেন। এ সময় তাঁকে না পেয়ে চাচাতো ভাই সমশের আলীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনার সময় সমশের আলী চিৎকার শুরু করলে তাঁর মাথায় দা দিয়ে কোপ দিয়ে পালিয়ে যান রহিম উদ্দীন ও তাঁর লোকজন। ঘটনাস্থলেই মারা যান সমশের আলী।
মৃতের ছেলে ফজিল উদ্দীন বলেন, ‘গতকাল রাতের ওই ঘটনার সময় আমার মা পাঁচজনকে চিনতে পেরেছেন। তাঁরা এসে আমার বাবাকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এর আগে সকালে ওই এলাকার বাদল, কলম, রহিম, সিরাজ ও খাদেমুল হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য আমি ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলাম। রাতে আমার বাবার ওপর হামলা করার খবরে বাড়িতে ছুটে আছি। পরে দেখি আমার বাবা মারা গেছেন। আমি আমার বাবা হত্যার ঘটনায় বিচার চাই।’
এ বিষয়ে দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক সোহেল রানা অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল সকালের ঘটনায় পুলিশ যদি ব্যবস্থা নিত, তাহলে রাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটত না। অভিযোগ দেয়নি বলে অজুহাত দেখিয়ে সময়ক্ষেপণ করেছে। আমি নিজে মোবাইল ফোনে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করার পরেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সভায় জবাব চাইব।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম বলেন, চেয়ারম্যান অভিযোগ করতেই পারেন। আর জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারধরের ঘটনাটি পুলিশে কেউ জানায়নি। তবে রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে আজ বৃহস্পতিবার মরদেহ উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
Array