দীর্ঘ প্রায় চার দশক পর যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউনা লোয়া থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে।
গত রবিবার (২৭ নভেম্বর) স্থানীয় সময় রাতে আগ্নেয়গিরিতে প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপের ভলকানিক অ্যাকটিভিটি সার্ভিস এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অগ্ন্যুৎপাত শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই অঞ্চলে রিখটার স্কেল প্রায় তিন মাত্রার ১০টির বেশি ভূকম্পন আঘাত হেনেছে। তবে সবচেয়ে বেশি মাত্রার ভূকম্পনটি ছিল ৪ দশমিক ২ মাত্রার।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে উদগিরিত গলিত লাভা পবর্তের সুউচ্চ শৃঙ্গ কলডেরাসে সীমাবদ্ধ রয়েছে। পাদদেশের বাসিন্দাদের জন্য এটি তেমন বিপজ্জনক নাও হতে পারে। তবে আগের ভয়াবহ উদগিরণের কথা বিবেচনায় রেখে স্থানীয়দের জন্য সতর্কবার্তা বাড়িয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, লাভার পরিমাণ যেকোনো সময় বাড়তে পারে এবং তা গড়িয়ে পাদদেশে নেমে এসে জনবহুল দুটি শহর হিলো ও কোনাতে ধ্বংসলীলা চালাতে পারে।
আগ্নেয়গিরি বিষয়ক ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ ও হাওয়াই ভলকানো অবজারভেটরিতে কর্মরত ড. জেসিকা জনসন বলেন, ‘লাভার স্রোত হিলো ও কোনা শহরের বাসিন্দাদের জীবনকে ভয়াবহ হুমকিতে ফেলে দিয়েছে। এমন উত্তপ্ত লাভা শহরের অবকাঠামো ও প্রকৃতি পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে পারে। সেই সঙ্গে উদগিরিত বিষাক্ত গ্যাস ও ছাইয়ের কারণে শ্বাসকষ্টে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে।’
ইউএসজিএস জানিয়েছে, অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে সতর্কতার মাত্রা আরও বাড়ানো হবে এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তায় জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হবে।
হাওয়া ভলকানোস ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে অবস্থিত ‘মাউনা লোয়া’ পর্বতটি হাওয়াইয়ের ‘বিগ আইল্যান্ড’-এ অর্ধেকেরও বেশি জায়গা দখল করে রেখেছে। মাউনা লোয়া পবর্তটি ২,০০০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। আগ্নেয়গিরির চূড়াটি সমুদ্রের উপরিভাগ থেকে ১৩ হাজার ৬৭৯ ফুট ওপরে।
এর আগে ১৯৮৪ সালের মার্চ ও এপ্রিল মাসে আগ্নেয়গিরিটিতে সবশেষ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। সে বছর আগ্নেয়গিরির লাভা হিলো শহরের কাছাকাছি (৮.০৫ কিলোমিটার) চলে এসেছিল।
Array