বছর, মাস, দিন পেরিয়ে এখন শুধুমাত্র কয়েক ঘণ্টার বাকী ফুটবল বিশ্বকাপের। কাতার বিশ্বকাপের উত্তেজনায় সরগরম হয়ে উঠেছে হাট-বাজার, চায়ের আড্ডা, বাড়ির ছাদ-দেওয়াল। বাদ যায়নি রাজধানীর ফুটপাতও। জার্সির সঙ্গে পতাকা বিক্রিতে জমে উঠেছে ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে বেচাকেনা।
সরবরাহ কম থাকায় চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দোকানিদের। তবে বিশ্বকাপ শুরু হলে এই চাহিদা আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা বিক্রেতাদের। রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, নিউ মার্কেট, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় জার্সি, পতাকা, ব্রেসলেটসহ নানান পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
তবে আর্জেন্টিনার জার্সি-পতাকা তুলনামূলক বেশি বিক্রি হচ্ছে। এরপরেই বিক্রি হচ্ছে ব্রাজিলের। জার্মানি, ফ্রান্স, পর্তুগালও পিছিয়ে নেই।
গুলিস্তানের দোকানি কামাল হোসেন বলেন, বিশ্বকাপ সামনে সবাই জার্সি কিনছে। ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে জার্সি বিক্রি করছি। খুব ভালো কেনা বেচা হচ্ছে। মেয়েরা আর্জেন্টিনার জার্সি বেশি কিনতেছে। আমি নিজেও আর্জেন্টিনার ভক্ত। এবার আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতবে।
বিশ্বকাপ জার্সি কিনতে এসেছেন হারাধন সাহা। তিনি বলেন, আমার ছয় বছরের ছেলে ব্রাজিল সমর্থন করে। তাই ছেলের জন্য একটি জার্সি কিনেছি।
বাবা-মায়ের সঙ্গে আর্জেন্টিনার জার্সি কিনতে এসেছে ছয় বছরের শিশু নুর ইসলাম। সে জানায়, আমি মেসির খেলা পছন্দ করি। তাই আর্জেন্টিনার জার্সি কিনেছি। জার্সিতে আমার নাম লেখাবো।
গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের বাইরে রাস্তার পাশে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় চোখে পড়ার মত। মানের দিকে খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও জার্সির দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় ক্রেতারা ভিড় করছেন এসব দোকানে।
তবে দোকানি ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবকিছুর দাম বাড়ায় এবার জার্সির দামও কিছুটা বেশি। কয়েক দিন ধরেই বিক্রি হচ্ছে জার্সি। সব ধরনের ক্রেতা থাকলেও সবচেয়ে বেশি কিনছেন তরুণ-তরুণীরা। শপিংমলের দোকানগুলোতে জার্সি বিক্রি এক দামে হলেও ফুটপাথে দাম হাঁকিয়ে যে যত কমে দিতে পারে- চলছে এই প্রতিযোগিতা।
চায়না ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা জার্সিগুলো এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে এবারের বিশ্বকাপ মৌসুমে দেশে তৈরি জার্সির চাহিদা বেশি। একটু কম দামে ফুটপাথে পছন্দের দলের জার্সি পাওয়ায় ফুটবলপ্রেমীদের ভিড় সেখানে বেশি। কিন্তু স্থান ও দোকানভেদে জার্সির দাম কমবেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতাই বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
এদিকে বিশ্বকাপের উন্মাদনাকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারাও। পতাকার সাইজ অনুযায়ী দামে ভিন্নতা। সবচেয়ে ছোট পতাকা ১০ টাকা থেকে শুরু করে বড়গুলো ১০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলির দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন রংয়ের পতাকার পাশাপাশি মেসি, নেইমার, রোনালদোসহ বিভিন্ন দেশের ফুটবলারের প্রতিকৃতি।
আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের জার্সি শুধু অফলাইনে নয়, সমানতালে বিক্রি হচ্ছে অনলাইনেও। সেখানে ব্রাজিলের বিক্রি হচ্ছে জার্সি ৪০০ থেকে ৭০০ টাকায়। আর আর্জেন্টিনার জার্সি মিলছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। তবে অনলাইনে কেনা জার্সির মান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে অনেকের।
Array