যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীদের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে ১১ অঙ্গরাজ্য। অভিবাসন আইন আরও জটিল হবার কারণ বিভিন্ন স্টেটে, কাউন্টিতে ও সিটিতে সিদ্ধান্ত, নীতি ও কর্মসূচি ভিন্ন ভিন্ন। নিরাপদ স্টেট হচ্ছে ১১টি।
অবৈধ অভিবাসীদের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে— ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, কলারাডো, ওয়াশিংটন ও অরিগন। তাছাড়া ১৮০টি সিটি ও কাউন্টি অভয়নগরীর মধ্যে রয়েছে- বোস্টন, শিকাগো, ডেনবার, লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক ও সানফ্রান্সিসকো। এ শহরগুলো ইমিগ্র্যান্টদের জন্য নিরাপদ স্থান। ১৮টি স্টেট ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার আইন করেছে। পাঁচটি স্টেট ক্যালিফোর্নিয়া, কানেকটিকাট, ইলিনয়, উটাহ ও নিউইয়র্ক অবৈধদের আইডি কার্ড দিয়েছে। এসব রাজ্য, কাউন্টি ও নগরী ফেডারেল কর্তৃত্বের সাথে সহযোগিতা না করার আইন পাস করেছে। এসব সমস্যার প্রতি চোখ বন্ধ করে রেখে দেশের সুষ্ঠু উন্নয়ন সম্ভব নয়।
অবৈধ ইমিগ্রেশন, অননুমোদিত ইমিগ্রেশন, অনিয়মিত ইমিগ্রেশন অথবা কাগজপত্রবিহীন ইমিগ্রেশন যে নামেই বলা হোক না কেন সেই ধরনের ইমিগ্রেশন সমস্যা আমেরিকার জন্য সংকটকে ঘনীভূত করছে। অর্থনৈতিক, আদর্শগত এবং রাজনৈতিক কারণে হোক, কংগ্রেস হয়তো অক্ষম বা অনিচ্ছা পোষণ করছে অননুমোদিত সীমান্ত ক্রসিং করে আসা মিলিন মিলিয়ন মহিলা-পুরুষ ও শিশুদের এদেশে অবৈধভাবে বসবাসের অনুমতি দিতে।
কংগ্রেসে এ বিষয়ে যখন এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থা, তখন ফেডারেল সরকার এই সমস্যার আনুষঙ্গিক ও মানবিক সংকট নিয়ে কাজ করা। তাছাড়া রয়েছে ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে এমন লোক এবং অধিকাংশ মাইগ্র্যান্ট যারা অবৈধভাবে এদেশে বাস করেছে তাদের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। সাম্প্রতিক সমস্যা সমাধানে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। এরপর রয়েছে ডাকার সুযোগ লাভকারীদের সমস্যা। ২০১৭ সালে বর্ডার সিকিউরিটির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেয়াল নির্মাণের প্রস্তাব করেছিল যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো বর্ডারে। ওই প্রশাসন অ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের হেলথ ইমারজেন্সি বিধান করে দেশের বাইরে রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন। তা টাইটেল ৪২ নামে পরিচিত।
বাইডেন প্রশাসন সীমান্ত দেয়াল নির্মাণ বন্ধ করেছেন। পরে সুপ্রিম কোর্ট রুলিং তাদের দেশের মধ্যে ব্যবস্থা করার কথা বলে। দেশের আইনসভা ও নির্বাহী কর্তৃত্বই শুধু নয়, দেশের বিচার বিভাগও এখন অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট নিয়ে কসরত করছে। আমেরিকার ফেডারেল কোর্টেও এ নিয়ে মামলার রাশ অনেক বেশি। ব্যাকলগে রয়েছে ১.৪ মিলিয়ন মামলা। সেখানে কোনো কোনো মামলার আবেদনকারীদের চার বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বর্তমানে অবৈধভাবে বসবাসকারী ইমিগ্র্যান্টের সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ বা ১১ মিলিয়নের বেশি। সম্ভবত তা আমেরিকায় বিদেশি জন্ম নেয়া শিশুর এক-চতুর্থাংশ।
গত সেপ্টেম্বর মাসে দক্ষিণ সীমান্তে কাস্টমস ও সীমান্ত প্রটেকশন সংস্থা ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৭ জন গ্রেফতার করে। ২০২২ সালে মোট ২.৭৬ মিলিয়ন ইমিগ্রেশন গ্রেফতার হয়। তা গত বছরের ১.৯৬ মিলিয়নের অনেক বেশি। তাদের মধ্যে অনেকে নিরাপত্তা প্রহরা এড়িয়ে মুক্ত হয়ে যায়। এছাড়া অনেকে ওভারস্টে করে। তাদের সংখ্যা ৬ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি। এদের সংখ্যা বর্ডারের আটক সংখ্যার সাথে অনুপাত ১:২।
Array