ডেস্ক রিপোর্ট/
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি সামনে রেখে শুরু হলো কপ–২৭ সম্মেলন। আফ্রিকার দেশ মিসরে বিশ্বের ২০০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সম্মেলনটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে এই সম্মেলন শুরু হয়েছে। কিন্তু কার্বন নিঃসরণের জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী চীনসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দেশের অংশগ্রহণ এতে থাকছে না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরের অবকাশ যাপনকেন্দ্র শারম আল–শেখে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বাইডেনের বিশেষ দূত জন কেরি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে উরসুলা ভ্যান ডার লেন এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
ব্রাজিলের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলা ইনাসিও দ্য সিলভাও এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আশঙ্কার বিষয় হলো বিশ্বের কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে থাকা একাধিক দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অনেকেই উপস্থিত থাকছেন না।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ধারণা করা হচ্ছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন না। তরুণ পরিবেশবাদী কর্মী গ্রেতা থুনবার্গও উপস্থিত থাকবেন না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, এর আগে সর্বশেষ কপ–২৬ সম্মেলনে বিশ্বের ধনী দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার লক্ষ্যে তিন বছর মেয়াদি ক্ষতিপূরণ আলোচনার বিষয়টি বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও প্রকট হয়ে উঠতে থাকায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনায় তোলার জন্য চাপ বাড়ছে।
কপ–২৭ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট সামেহ শুকরি উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ‘এই ইস্যুটি আলোচনার তালিকায় রাখার মানে হলো বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ করা।’ সামেহ তাঁর ভাষণে, ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আলোচনাকে চালিয়ে নিতে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরির প্রতি জোর দেন এবং ২০২৪ সালের মধ্যে একটি ঐকমত্যে পৌঁছানোর বাধ্যবাধকতার বিষয়েও জোরারোপ করেন।
এই বিষয়ে আলোচনার এজেন্ডা হিসেবে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি রাখায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশভিত্তিক পরিবেশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি ‘সুখের সংবাদ’ যে, ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আনুষ্ঠানিক আলোচনার তালিকায় রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সালিমুল হক বলেছেন, ‘এখন ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে অর্থায়ন করার বিষয়ে আসল কাজ শুরু হলো।’
Array