রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে পানি সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকোর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বিবিসি।
মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানিয়েছেন, রাজধানী শহরের ৪০ শতাংশ লোক এখন পানির সংকটে আছেন। প্রায় পৌনে তিন লাখ পরিবারে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল সোমবারের হামলায় ইউক্রেনে ১৩ জন মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা ও জ্বালানি ব্যবস্থা ছিল তাদের হামলার লক্ষ্য। এবং তারা এসব লক্ষ্যবস্তুতেই আঘাত হেনেছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আরও হামলার লক্ষ্যবস্তু হওয়ার আশংকা এড়ানোর জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সোমবারের হামলার চিহ্ন ছড়িয়ে আছে সবখানে।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বিদ্যুৎ ব্যবহারে ইউক্রেনীয় নাগরিকদের অত্যন্ত মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিয়েভে রাস্তার বাতিগুলো নিভিয়ে রাখা হয়েছে। এখন ট্রলি বাসের পরিবর্তে প্রচলিত বাস সার্ভিস চালানো হচ্ছে।
বাড়িতে পানি না পেয়ে রাস্তায় থাকা পাম্পগুলো থেকে পানি সংগ্রহের জন্য হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিয়েভের ৮০ শতাংশ বাড়ি এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।
সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মি. জেলেনস্কি বলেছেন, বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ স্থাপনের জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ভিন্ন এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “ইউক্রেনীয়দের বেঁচে থাকার ইচ্ছা মেরে ফেলার ক্ষেপণাস্ত্র নাই রাশিয়ার।”
ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাজধানী কিয়েভ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য এলাকার মধ্যে রয়েছে লাভিভ, খারকিভ, জাপোরিশা এবং দনিপ্রপেট্রোভস্ক।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, মোট ১০টি অঞ্চলের ১৮টি স্থাপনা, যার বেশিরভাগই জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভূপাতিত করেছে এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র মলদোভার একটি সীমান্ত শহরে গিয়ে পড়েছে।
মলদোভার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এতে সেখানকার বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
মলদোভা পরে বলেছে যে, চিসিনাউতে রুশ দূতাবাসের একজন কর্মীকে এলাকা ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। যদিও ওই ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
সোমবার সকালে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া থেকে অন্তত ৫০টি ক্রুজ মিসাইল ছোঁড়া হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়।
শনিবার বন্দর নগরী সেভাস্টোপোলে ড্রোন হামলা চালিয়ে রাশিয়ার একটি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন অভিযোগের জবাব হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তবে শনিবারের হামলা নিয়ে ইউক্রেন কোন মন্তব্য করেনি।
Array