ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপি এখন নির্বিঘ্নে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “বিএনপি এখন নির্বিঘ্নে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারলেও, অগ্নিসংযোগ করে যারা জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে তাদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।”
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্বকালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “যেহেতু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাই বিএনপি এখন নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ, মিছিলসহ সব কর্মসূচি আয়োজন করতে পারছে। তবে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। কারণ, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে।”
২০১৩-২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগ সহিংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে; ট্রেন, বাস, লঞ্চ এমনকি সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ সর্বত্র অগ্নিসংযোগ করেছে।”
তিনি বলেন, “অপরাধীরা আত্মগোপন করেছে, কিন্তু বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করছে বলে তারা এখন বেরিয়ে আসবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “তারা জনগণকে নির্যাতন করেছে। তাদের জন্য কোনো জায়গা থাকবে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আইন সবার জন্য সমান।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “এদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রাজনীতির কোনো স্থান থাকবে না। আমরা এর অনুমতি দেব না।”
শেখ হাসিনা বলেন, “তার দল জনগণের জন্য কাজ করে, তাদের মন জয় করে ক্ষমতায় এসেছে এবং এখনও জনগণের আস্থা রাখতে সক্ষম হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা জনগণের ভোট ও আস্থা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা গত ১৪ বছর ধরে এই দেশের জনগণের আস্থা ধরে রেখেছি। বরং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।” এই অর্জন ধরে রেখে তার দলের নেতাকর্মীদের তিনি সামনে এগিয়ে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, “যারা সন্ত্রাসী, খুনি, ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার অপরাধী, গ্রেনেড হামলাকারী এবং যারা ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছে তাদের জনগণ বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশের জনগণ কখনই তাদের পাশে দাঁড়াবে না এবং তাদের ভোটও দেবে না।”
পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের বৈদেশিক রিজার্ভের অর্থে গঠিত বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের নিজস্ব অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে ২% সার্ভিস চার্জে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং ২% সুদে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। সুতরাং, এটি রিজার্ভকে প্রভাবিত করবে না বরং এটি থেকে লাভও হবে।”
জ্বালানি সংকট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে কীভাবে ঘাটতি মেটাতে জ্বালানি আমদানি করা যায় সে বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
খাদ্য আমদানিকারকদের সঙ্গে সম্প্রতি এক বৈঠকে তিনি ব্যবসায়ীদের স্পষ্টভাবে বলেন, “সরকার যদি আন্তর্জাতিক দামে জ্বালানি কিনতে প্রস্তুত হয়, তবে তা আমদানি করতে পারে। এখানে অতিরিক্ত ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। কারণ খাদ্য ক্রয়ের জন্য ভর্তুকি হিসাবে ৪৬ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। এখন কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য প্রায় ৮৬ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। সরকার দেশে সৌরশক্তি বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তার সরকারের সাফল্য ও অর্জন, উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং বিএনপি সরকারের দুঃশাসন জনগণের সামনে তুলে ধরতে বলেছেন।
Array