রংপুর প্রতিনিধি: বিএনপির মহাসমাবেশের একদিন আগেই শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে রংপুরে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। জেলা মটর মালিক সমিতির আহ্বানে এই ধর্মঘট চলছে।
ফলে ঢাকাসহ আন্তঃজেলায় সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকালে নগরীর কামারপাড়ায় ঢাকা বাসস্টান্ডে দেখা গেছে, বাসের টিকেট কাউন্টারগুলো বন্ধ। ঢাকাগামী বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে।
এ সময় কথা হয় নাবিল পরিবহনের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, বিএনপির সমাবেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কায় বাস চলাচল বন্ধ রাখতে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসচালক মমতাজ উদ্দিন। তিনিও আলাপে যুক্ত হন। তিনি জানান, বিএনপি মহাসমাবেশকে ঘিরে সরকারি দলও পাল্টা কর্মসূচি দিতে পারে। এতে বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করে বাস মালিকরা ধর্মঘট ডেকেছেন।
ধর্মঘট ঢাকার বিষয়ে সবারই মতামত এক। তবে এর পরিণতি ভোগ করতে হয় নিম্নআয়ের মানুষদের। পরিবহন শ্রমিকেরা এমন ধর্মঘটের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষ্য, রাজনীতির বলি হচ্ছেন তারা। তারা রাজনীতি না বুঝলেও রাজনীতির কারণে তাদের না খেয়ে থাকতে হচ্ছে।
বাসচালকের সহকারী আজিজুল, সাহানুরের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, “আমাদের একদিন কাজ বন্ধ থাকলে না খেয়ে থাকতে হয়। ধর্মঘট আমাদের পরিবারের জন্য উপোসের দিন ছাড়া আর কিছু দেবে না।”
একই অবস্থা রংপুর সেন্ট্রাল বাস টার্মিনালেও। সেখানে শতাধিক রুটের বাসগুলো দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাক, মাইক্রোবাস, মিনিবাস চলাচলও বন্ধ থাকায় সেগুলোও নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
একদিকে যেমন স্বল্পআয়ের পরিবহন শ্রমিকেরা চিন্তায় পড়েছেন। অন্যদিকে সাধারণ যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় দুর্ভোগ। রংপুর থেকে বগুড়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাস টার্মিনালে এসেছিলেন শাহাবুল। তিনি জানান, “তার অতিজরুরি কাজে বগুড়া যাওয়া দরকার। তবে বাস বন্ধ থাকায় যেতে পারছেন না।”
রহিমা বেগম নামে এক বৃদ্ধ গাইবান্ধা যাওযার জন্য বাস টার্মিনালে এসে ফিরে যাচ্ছেন। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, “ছেলের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজনীতি তো ছেলের সঙ্গে মায়ের দেখা হতে দিল না।”
ধর্মঘট প্রসঙ্গে জেলা মটর মালিক সমিতির সহসভাপতি মারুফ বলেন, “বিএনপির সমাবেশ স্থলের পাশেই আওয়ামী লীগের উদ্যেগে বাণিজ্য মেলা হচ্ছে। দুপক্ষের মধ্যে যেকোনো সময় সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বাসে হামলা হতে পারে, আগুন দেওয়া হতে পারে। ফলে আমরা বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
Array