আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় উপহার তোষাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রির অভিযোগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য পার্লামেন্ট সদস্য হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সর্বসম্মতভাবে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি বেঞ্চ ইসলামাবাদে এই রায় দেয়।
রায়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান আর দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির (পার্লামেন্ট) সদস্য নন।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, তোষাখানা মামলায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ইসলামাবাদের কমিশন সচিবালয়ে হাজির হতে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বে কমিশনের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ মামলাটির শুনানি গ্রহণ করেন।
শুনানিতে ইমরান খানের আইনজীবী দাবি করেন, নিয়ম মেনে তোষাখানা থেকে উপহার কিনেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়। উপহার কেনার অর্থের উৎস সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন কমিশনের সদস্যরা। জবাবে ইমরান খানের আইনজীবী বলেন, তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য কমিশনকে দেবেন না।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের এই রায়ের ফলে পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, দেশের মজলিস-ই-শুরার (পার্লামেন্ট) পাশাপাশি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনেও ভোট করার সুযোগ থাকল না ইমরান খানের সামনে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ওই রায় প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা ইসলামাবাদ হাইকোর্টে যাবে। সেই সঙ্গে নেতাকর্মীদের বিক্ষোভে নামারও আহ্বান জানানো হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
গত আগস্টে ইমরানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলেন ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) এক সদস্য। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে বলা হয়, বিদেশিদের কাছ থেকে পাওয়া রাষ্ট্রীয় উপহার তোষাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রি করেন দেন তিনি। এমনকি ঘোষণাপত্রে সম্পদ প্রকাশও করেননি।
তোষাখানা কেলেঙ্কারির ঘটনায় ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণার আবেদনটি গত ২২ আগস্ট নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ।
২৮ পৃষ্ঠার আবেদনে বলা হয়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রাষ্ট্রীয় তোষাখানা থেকে ৫২টি উপহার নিয়েছেন। তিনি আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে নামমাত্র মূল্যে এসব উপহার নিয়েছেন। অধিকাংশ উপহার তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন।
উপহারের মধ্যে কিছু দামি হাতঘড়িও রয়েছে। এসব উপহারের আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ২০ লাখ পাকিস্তানি রুপি। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ এসব উপহার নিয়েছিলেন।
Array