অনলাইন ডেস্ক:
ডব্লিউডব্লিউএফ-যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানবিষয়ক পরিচালক মার্ক রাইট বলেন, প্রকৃতি আগেও চরম দুর্দশার মধ্যে ছিল এবং এখনো আছে। এই লড়াইয়ে প্রকৃতি স্পষ্টতই হেরে যাচ্ছে।
সমগ্র বিশ্বে ক্রমবর্ধমান বনভূমি উজাড়, দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। ১৯৭০ সালের পর থেকে গত ৫০ বছরে পৃথিবীতে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৬৯%।
বন্য প্রাণিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন বিশ্ব বন্য প্রাণী তহবিল (ডব্লিউডব্লিউএফ) ও জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডনের (জেডএসএল) করা এক যৌথ সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, এটি একটি “গুরুতর পতন”। এ ঘটনা আমাদের বলছে, প্রকৃতি উন্মোচিত হচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুনিয়া শূন্য হয়ে যাচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পাঁচ হাজারের বেশি প্রজাতির প্রায় ৩২ হাজার বন্যপ্রাণীর অবস্থার বিষয়ে জেডএসএলের ২০১৮ সালের তথ্য ব্যবহার করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে ডব্লিউডব্লিউএফ। এতে দেখা গেছে, বন্যপ্রাণীর সংখ্যা গড়ে ৬৯% কমেছে। এর জন্য বন উজাড়, মানুষের হস্তক্ষেপ, দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়েছে।
লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কমে গেছে। ওই অঞ্চলগুলো গত ৫০ বছরে ৯৪% বন্যপ্রাণী হারিয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের আমাজনে পিংক রিভার ডলফিনের সংখ্যা ১৯৯৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ৬৫% কমেছে।
জেডএসএলের সংরক্ষণ এবং নীতিবিষয়ক পরিচালক অ্যান্ড্রু টেরি বলেন, এই ফলাফলের সঙ্গে ডব্লিউডব্লিউএফের ২০২০ সালের মূল্যায়নের ব্যাপক মিল রয়েছে। এতে দেখা যায়, বন্যপ্রাণীর সংখ্যা প্রতি বছর প্রায় ২.৫% কমে যাচ্ছে।
ডব্লিউডব্লিউএফ-যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানবিষয়ক পরিচালক মার্ক রাইট বলেন, প্রকৃতি আগেও চরম দুর্দশার মধ্যে ছিল এবং এখনো আছে। এই লড়াইয়ে প্রকৃতি স্পষ্টতই হেরে যাচ্ছে।
তবে প্রতিবেদনে কিছুটা আশার আলোও দেখা গেছে। কঙ্গোর কাহুজি-বিয়েগা জাতীয় উদ্যানে গরিলার সংখ্যা ১৯৯৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৮০% কমে গেলেও ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের নিকটবর্তী পর্বতে এই প্রাণীর সংখ্যা ২০১০ সালে প্রায় ৪০০টি থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে ৬০০টির বেশি হয়েছে।
এরপরও দ্রুতগতিতে বন্যপ্রাণী কমে যাওয়া ঠেকাতে বাড়তি সহযোগিতার আহ্বান জোরালো হচ্ছে। বিশ্বের উদ্ভিদ ও প্রাণীদের রক্ষায় নতুন কৌশল তৈরির জন্য সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা আগামী ডিসেম্বরে মন্ট্রিলে সমবেত হবেন।
বিশ্বব্যাপী প্রাণী সংরক্ষণ প্রচেষ্টার জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধির বিষয়েই বেশি আহ্বান জানানো হচ্ছে। ডব্লিউডব্লিউএফ-এর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যালাইস রুহওয়েজা বলেন, প্রকৃতিকে রক্ষার জন্য আমরা ধনী দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
Array