অনলাইন ডেস্ক:
গত বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল হওয়ায় প্রায় ৫১.৭৬% মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে।
এ বছর ভারতে ১,৩৫২ টন ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ সরকার মোট এক কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ডলার আয় করেছে। এক সংবাদ সম্মেলেনে এ তথ্য জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার সমন্বিতভাবে নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করায় ইলিশের উৎপাদন আশাতীতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১২ বছরে দেশে ইলিশ আহরণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এ সময়ে দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির হার প্রায় ৯০%।’’
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২২’’ বাস্তবায়ন উপলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
রেজাউল করিম বলেন, ‘‘গত বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল হওয়ায় প্রায় ৫১.৭৬% মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৩৯,৩১৫ কোটি জাটকা ইলিশ সম্পদে যুক্ত হয়েছে।’’
মন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রতি বছরের মতো এবারও ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২২’-এর আওতায় ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন উপকূলীয় ইলিশ প্রজননক্ষেত্রের অন্তর্গত ৭,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাসহ দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ আইন কেউ অমান্য করলে কমপক্ষে এক থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’’
শ ম রেজাউল বলেন, ‘‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে বাধা দিলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে ইলিশ আহরণের চেষ্টা করলে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।’’
তিনি জানান, এ বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ২০ জেলা যথা- চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার,বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, ঢাকা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ জেলার নদ-নদী ও মোহনায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় বন্ধ থাকবে এবং এসব জেলার বরফকলগুলোও বন্ধ থাকবে।
এ সময় আরও ১৮টি জেলা যথা- গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, কুষ্টিয়া, নড়াইল এবং জামালপুর জেলায় শুধু ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
মন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন, দেশের ৩৮ জেলার সব নদ-নদী ও মোহনায় মা ইলিশ আহরণ বন্ধে দিনে ও রাতে অভিযান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা এবং সারাদেশের মাছ ঘাট, মৎস্য আড়ৎ, হাট-বাজার, চেইনশপ ও অন্যান্য বিক্রয়কেন্দ্রে ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় বন্ধে ব্যাপক অভিযান চালানো হবে।
স্থানীয় জেলা-উপজেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব, পুলিশ, নৌ-পুলিশ এবং মৎস্য অধিদপ্তর সম্মিলিতভাবে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা করবে বলে মন্ত্রী জানান।
Array