• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • ‘এবার বাঁচার আশা নেই’ : ধ্বংসস্তূপে বসে গাজাবাসীর শেষ বাক্য 

     অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক 
    07th Apr 2025 12:02 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণ এবং হামলার মধ্যে ফিলিস্তিনিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের শেষ বার্তা ও বিদায় চিঠি লিখে রেখেছে। তাদের আশঙ্কা, এবার তারা বাঁচবেন না।

     

     

    ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকেই গাজাবাসী একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে এবং ইসরায়েলের আক্রমণ ও তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আসছেন।

    তবে গত ২৪ ঘণ্টায়, এক আতঙ্কের মধ্যে লেখা বার্তাগুলোর সংখ্যা বেড়েছে, যেখানে গাজার নাগরিকরা মৃত্যুভয় এবং হতাশা প্রকাশ করছেন।

     

     

    বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১১২ ফিলিস্তিনি নিহত হন। গত ১৮ মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের হামলা পুনরায় শুরু হওয়ার পর এটিই ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ দিন। একে অপরকে এই মুহূর্তে বাঁচার আশা নেই বলে মন্তব্য করে গাজাবাসীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা পোস্ট করছেন।

     

    যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এক প্রতিবেদনে এসব হৃদয়বিদারক বার্তার কথা তুলে ধরেছে। গাজার এক নারী নূরের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া একটি এলাকায় পাশের ভবনে ইসরায়েলি হামলা হচ্ছে, আর ভিডিওটির পটভূমিতে এক নারীর কান্নার শব্দ শোনা যায়। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘এবার মনে হচ্ছে আমরা বাঁচব না’…।

     

     

    দক্ষিণ গাজার রাফাহ থেকে সাংবাদিক আবদুল্লাহ আলাত্তার শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে একটি পোস্টে লিখেছেন, এবার আমরা টিকতে পারব না বলে মনে হচ্ছে। দেইর আল বালাহর ফুটবল সাংবাদিক আবুবকর আমেদ লিখেছেন, গাজাবাসী জানে, বিশ্ব তাদের নিরাশ করেছে। তাই তাদের হত্যা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

     

     

    গাজার একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী বিশ্ববাসী এবং নেতাদের গাজাবাসীর পক্ষে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পোস্ট করছেন। ফিলিস্তিনিরা শুধু বোমাবর্ষণেই নয়, খাদ্য সংকটের শিকারও হচ্ছেন। এক ফিলিস্তিনি লিখেছেন, মাথার ওপর বোমা, নিচে ক্ষুধা—গাজা আজ ধুঁকছে। আর কতদিন আমরা এভাবে টিকে থাকব? বিশ্বকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে!

     

     

    অপরদিকে ইসরায়েলের যুদ্ধ এখনো তার মিত্রদের সমর্থন ও অর্থায়নে চলছে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। গত মার্চে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন কংগ্রেসের স্বাভাবিক পর্যালোচনা ছাড়াই ইসরায়েলকে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার অস্ত্র বিক্রি অনুমোদন করে।

     

     

    বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক অনুমোদিত ৮.৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রস্তাব দেন। তবে মাত্র ১৫ সিনেটর (যাদের মধ্যে টিম কেইন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এলিজাবেথ ওয়ারেনও রয়েছেন) সমর্থন করায় প্রস্তাবটি ব্যর্থ হয়।

     

     

    এই সময়ে, অনেক ফিলিস্তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত্যুর আগে বিদায় বার্তা ও প্রার্থনা পোস্ট করছেন। গাজার লেখক ও ফার্মাসিস্ট ওমর হামাদ স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে এক্স (টুইটার)-এ লিখেছেন, আমার লেখা কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। প্রথমে উৎসাহী ছিলাম, যা লিখতাম সব শেয়ার করতাম। কিন্তু কী দেখলে বা পড়লে তোমরা জাগ্রত হবে—তা আমি জানি না। আমাদের জন্য নয়, তোমাদের বিবেকের জন্য, যাতে ঘুমোতে গিয়ে তোমাদের বিবেক কাঁদে না।

     

     

    ৩ এপ্রিল আরেক পোস্টে তিনি লিখেছেন, গোটা গণহত্যার মধ্যে এত কাছে থেকে কখনো মৃত্যুকে অনুভব করিনি, যতটা করছি এখন।

     

     

    ইউরোপীয় হাসপাতাল ও আল আকসা হাসপাতালের চিকিৎসক হামজা আল শারিফ লিখেছেন, গাজার সর্বত্র বোমাবর্ষণ তীব্র হচ্ছে, রক্তের ছোঁয়া সবখানে। ১৮ মার্চ থেকে তার প্রোফাইলে পিন করা পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমি যদি মারা যাই, আমি শুধু একটি সংখ্যা নই—আমি একা এক গ্রহ, আমার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা ছিল। আমাকে তোমাদের দোয়া থেকে ভুলো না, আমার কথা বলতে থাকো।

     

     

    গত মাসে ইসরায়েলের মিসাইলে আল জাজিরার ২৩ বছর বয়সী সাংবাদিক হোসাম শাবাত নিহত হন। এর কয়েক ঘণ্টা আগে প্যালেস্টাইন টুডের সাংবাদিক মোহাম্মদ মানসুরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে, তার স্ত্রী এবং ছেলেকে হত্যা করা হয়। হোসামের মৃত্যুর পর তার সহকর্মীরা তার আগে থেকে লেখা একটি বার্তা শেয়ার করেন : আপনি যদি এটি পড়েন, তাহলে আমি ইসরায়েলি সেনারা টার্গেটে পরিণত হয়ে নিহত হয়েছি।

     

     

    এই আত্মশ্রদ্ধাঞ্জলি স্মরণ করিয়ে দেয় প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি কবি ও শিক্ষাবিদ রিফাত আল আরির কথা, যিনি গত ডিসেম্বরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। তার ‘যদি আমাকে মরতেই হয়’ কবিতাটি ইসরায়েলের যুদ্ধের মধ্যে প্রতিবাদ ও আশার প্রতীক হয়ে উঠেছিল।

     

     

    গাজাবাসীদের এই শেষ শব্দগুলো যেন পৃথিবীকে এক ভয়াবহ সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়—যেখানে শুধু মৃত্যুই নয়, বরং একটি জাতির অস্তিত্বের ওপর ভয়াবহ আক্রমণ চলছে।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    April 2025
    M T W T F S S
     123456
    78910111213
    14151617181920
    21222324252627
    282930