চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ককটেল আতঙ্ক। ৫ দিনের ব্যবধানে সরকারি অফিস, পৌরসভার ও বিদ্যালয় ভবন থেকে ককটেল উদ্ধারের পর এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও কে বা কারা, কী উদ্দেশ্যে ককটেল রেখে যাচ্ছে এ নিয়ে রহস্য রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে। আদালত চত্ত্বর, জেলা প্রশাসকের বাস ভবন, নির্বাচন অফিস থেকে শুরু করে ভোটে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের বাড়িতেও ককটেল বিস্ফোরণ হয়।
তবে নির্বাচনের পরে শহরে ককটেল বিস্ফোরণ বা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেনি। সম্প্রতি তিনটি স্থান থেকে ককটেল উদ্ধারের পর আবারও শহরজুড়ে ককটেল আতঙ্ক শুরু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৮ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন একটি ড্রেন থেকে চারটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। ওইদিন সকালে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ড্রেন পরিষ্কার করার সময় ককটেলগুলো দেখতে পায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এরপর গত ১০ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসের সীমানার মধ্য থেকে আরও দুটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। ওইদিন বিকেলে জেলা নির্বাচন অফিসের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে ককটেল দুটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। ককটেল উদ্ধারের আগের রাতে (৯ ডিসেম্বর) ওই এলাকায় একটি বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
সবশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনের ছাদ থেকে ৩টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। বিদ্যালয়ের একটি ভবনের ছাদে ককটেলগুলো দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে ককটেলগুলো উদ্ধার করে।
নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিনুর রহমান বলেন, ‘১১ তারিখের পর থেকে বিদ্যালয়ে ছুটি রয়েছে। এই বন্ধ সময়ে কে বা কারা ককটেলগুলো রেখে যায় বিদ্যালয়ের ছাদে। ককটেল উদ্ধারের পর বিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যেহেতু বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে সেহেতু বিদ্যালয়কেন্দ্রিক আতঙ্ক নেই। তবে আশেপাশের মানুষের মাঝে একটা আতঙ্ক থাকবে এটা স্বাভাবিক।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে ককটেল রেখে গেছে আমার অফিসের সীমানায়, এটা নিশ্চিত নয়। ককটেল উদ্ধারের পর স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি আগের রাতে আরেকটি ককটেল বিস্ফোরণের কথা। আমরা আইনশঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করেছি। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব তাদের।’
নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও পৌরসভার সংলগ্ন ইসলামপুরের বাসিন্দা আশরাফ আলমগীর বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পৌরসভার ড্রেন ও বিদ্যালয়ের ছাদ থেকে ককটেল উদ্ধারের খবর জেনেছি। এটা অবশ্যই আতঙ্কিত হওয়ার মতো বিষয়। যেখানে সেখানে ককটেল পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো তো বিস্ফোরণ হয়ে জানমালের ক্ষতিও হতে পারে যে কোনো সময়।’
৫ দিনের ব্যবধানে তিনটি ঘটনা ঘটলেও এখনও পুলিশ রয়েছে অন্ধকারে। কে বা কারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা জানতে পারেনি পুলিশ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূরুল কাদির সৈকত বলেন, ‘ককটেল উদ্ধারের পর কারা এর সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।’
Array