২০০৮ সালের দিকে রাজধানীর বারিধারায় ‘এভিনিউ’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ শুরু করেন মো. মুক্তার হোসেন। এরপর গুলশানে ‘লেক ভিউ’ রেস্টুরেন্টেও ওয়েটার হিসেবে ছিলেন। সেই মুক্তার এখন শতকোটি টাকার মালিক। তার যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি-বাড়ি আছে। সেখানে বসবাস করেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা।
রাজধানীর উত্তরায় মুক্তার হোসেনের একটি বার রয়েছে। এই বারে প্রতিদিন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের যাতায়াত ছিল। তাদের মধ্যে রয়েছেন সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরার-১৩ নম্বর সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ রোডে অবস্থিত একটি ভবনে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই ভবনেই ‘কিংফিশার রেস্টুরেন্ট’ নাম দিয়ে বার চালাতেন মুক্তার। সেখান থেকে প্রায় ৫০০ বোতল মদ ও ছয় হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করে ডিবি পুলিশ। এসময় বার ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মুক্তার হোসেন পলাতক। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন আবু সালেহ, মো. মোহন, মুকুল, মো. সিব্বির আহম্মেদ, রাসেল, আবুল কাসেম মিন্টু, নাহিদ দারিয়া, শান্ত ইসলাম, আলিম উদ্দিন, জালাল উদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন, রহমত আলী, খালেক সাইফুল্লাহ, ইমরান, মো. সাহান শেখ, মো. মোফাজ্জেল, ওবায়েদ মজুমদার, ইবাদত খান, রাইস উদ্দিন, রায়হান, মো. রুবলে, রিফাত, ফয়সাল, শরিফুল ইসলাম, রাসেল, জাহিদ হাসান, রওশন জামিল রাসেল, হুমায়ুন কবির, তোফাজ্জেল হোসনে, মো. রিয়াদ হোসেন, আল আমনি, কাইয়ুম, নয়ন দাস, শাওন দাস ও মাহমুদুল হাসান।
ডিবি পুলিশ জানায়, ওই বারে প্রতিদিন যাতায়াত ছিল বিভিন্ন মানুষের। তাদের মধ্যে সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ রয়েছেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল যে, উত্তরার ওই ভবনে গান-বাজনার নামে ছেলেমেয়েরা ডিজে পার্টি করছে। একই সঙ্গে সেখানে বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ মদ। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, অভিযানে প্রায় ৫০০ দামি বিদেশি মদ ও প্রায় ছয় হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করা হয়। এগুলো কীভাবে দেশে নিয়ে এসেছে এ বিষয়ে কোনো তথ্যই জানাতে পারেনি বার কর্তৃপক্ষ।
কাগজপত্র দেখতে ডিবি পুলিশ বাড়িটিতে রাত ৯টা থেকে ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। তারপরও তারা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
এরপর বার থেকে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়েছে। সে মামলায় আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কাকে কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, মালিক ও ম্যানেজারসহ অনেককে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
ডিবি জানায়, মুক্তার হোসেনের আরও বার রয়েছে। মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জসহ পাঁচটি বার চালান তিনি।
Array