চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়া পুলিশ পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুককে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) তাকেসহ মোট ২২ নিরস্ত্র পরিদর্শককে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদোন্নতি দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান শেখের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানা যায়। একই দিন ১৯ সশস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক এবং ৪ ট্রাফিক ইন্সপেক্টরকে এএসপি হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
আবু জাফর মো. ওমর ফারুক সবশেষ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সোমবার মন্ত্রণালয়ের আদেশে তার চাকরি পুলিশ সদরদপ্তরে ন্যাস্ত করা হয়। পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম মেট্রো কর্মরত থাকাকালে মিতু হত্যা মামলায় এএসপি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া ওমর ফারুক ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মিতু হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট দেন আদালতে।
দুই হাজার পৃষ্ঠার বেশি ওই প্রতিবেদনে মিতুর স্বামী ও সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ মোট সাতজনকে আসামি করা হয়। যদিও মামলাটি ওমর ফারুকের আগে আরও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত করেছিলেন। বর্তমানে মামলাটি চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সবশেষ গত ১৭ জুলাই মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরের ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী এসপি বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল।
- এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। গত বছরের ১৩ মার্চ আলোচিত মামলাটিতে বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।