ছাত্রাবস্থায় ছিলেন তুখোড় শিবির নেতা, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরির পরই হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি। এমনই অভিযোগ ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার মোঃ ফয়সাল আহমেদের বিরুদ্ধে। একই সাথে তিনি মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য কোটায় চাকরি পেলেও তার পিতা মোঃ আব্দুল হামিদ সরকার মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না। সূত্রে এসকল বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
জামুকা সূত্রে জানা যায় ,গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি জামুকার সুপারিশ বিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসরকারি গেজেট নিয়মিত করনের লক্ষ্যে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই -বাছাই কমিটির প্রতিবেদন পাঠায়। সেখানে মোঃ ফয়সাল আহমেদের বাবা মোঃ আব্দুল হামিদ সরকারের যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন জামুকাতে পাঠানো হয় । উক্ত প্রতিবেদনে সামগ্রিক দিক বিবেচনা তার আবেদন সর্বসম্মতিক্রমে না মঞ্জুর করা হয় ।
উল্লেখ্য তিনি চাকুরির লিখিত পরীক্ষায় ২৪ পেয়েছিলেন, পাশাপাশি মৌখিক পরীক্ষায় পেয়েছেন ২৫ । লিখিত পরীক্ষার পাশ নাম্বার ছিল ২৫ ।সে হিসেবে তিনি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও চাকরিতে যোগদান করেন । কথিত আছে মোটা অংকের ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে তিনি চাকরিটি বাগিয়ে নেন।
পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন উপায়ে নিজেকে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করলেও তার সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকের বিএনপি-জামায়তের সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক অনিয়মসহ একাধিক অভিযোগে তিনি জর্জরিত। সম্প্রতি তার বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা প্রশ্ন করলে মোঃ ফয়সাল আহমেদ তাদের অপ্রিতীকর প্রস্তাব দিয়ে বলেন, “আপনাদের টাকার উৎস জানার দরকার নেই আপনাদের কত লক্ষ-কোটি টাকা লাগবে বলেন আমি ব্যবস্থা করে দিব।”
তাছাড়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি ও সাবেক রেজিষ্টার রেজাউল হক এবং বিশ্ববিদ্যালয় বাইরের কিছু বিতর্কিত ব্যক্তির যোগসাজশে মোটা অংকের অর্থ কেলেংকারীর অভিযোগ রয়েছে ফয়সাল আহমেদের বিরুদ্ধে।
রেজাউল হককে পাবনা থেকে ফয়সাল নিয়ে আসে ইআবিতে। রেজাউলের সাথে সিন্ডিকেট করে সে বিভিন্ন ফাইল বাণিজ্য শুরু করে।
রেজাউল হক লিয়েনে এক বছরের জন্য আসেলেও মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অর্জিত ছুটি দিয়ে ফয়সাল জোর করে তিন মাস রাখে। তিন মাস শেষ হওয়ার পর ফয়সাল অবৈধভাবে তাকে রাখার জন্য তদবির করে । সাবেক শিবির নেতা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার পদে আসার জন্য আবারও তদবির শুরু করেছে ।
ফয়সাল যখন বিশ্ববিদ্যালয় শুরুতে অর্থ ও হিসাব দপ্তরে ছিলেন সেই সময় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের টেন্ডার থেকে নগদ অর্থ লেনদেনের সময় পরিচালক তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং তার বিরুদ্ধে আভিয়োগ দাখিল করেন। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে যে অর্থ কেলেঙ্কারের অভিযোগ ছিল কিন্তু সেই অর্থের অভিযোগ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি ।
২০২০-২০২১ অর্থ বছরে অর্থ দপ্তরের ফয়সাল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ সরকারি ব্যাংকে বিনিয়োগ না করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে এফডিআর করেন। যেখান থেকে তিনি ২০ -২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসে । পাশাপাশি রেজিস্ট্রার রেজাউল হক ও ফয়সালের যোগসাজোসে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে।
Array