দেশের ৬২ জেলার ৩২২টি উপজেলার ৬৭৪টি ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নতুনভাবে নির্মাণ করবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিইডি)। এর আগে দুই ধাপে সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্মাণ করেছে এলজিইডি। তৃতীয় ধাপে দেশের ৬৭৪টি ইউনিয়ন পরিষদ তৈরির একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে এলজিইডি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শহরের সুবিধাদি গ্রামে সম্প্রসারণ এবং স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
একনেক শাখা সূত্রে জানা গেছে, ‘ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (৩য় পর্যায়)’ প্রকল্পটি আগামী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করবে পরিকল্পনা কমিশন। পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য সুপারিশ করেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। একনেক সভায় অনুমোদনের পর প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
প্রকল্পের যৌক্তিকতার বিষয়ে এলজিইডি জানায়, বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার মধ্যে সর্বনিম্ন স্তর হলো ইউনিয়ন পরিষদ। স্থানীয় জনগণের উদ্ভূত সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানসহ এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সারা দেশের সব নাগরিকের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতেই “ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (৩য় পর্যায়)” প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।
পাসপোর্ট করানো যাচ্ছে না ঢাকার শিশুদের
এলজিইডি আরো জানায়, প্রকল্পটি সামাজিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প, ইউনিয়ন পর্যায়ে কার্যকরী স্থানীয় সরকার গঠন হবে বিবেচনায় এর অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। প্রকল্পটি সামাজিক ও সেবাধর্মী, তবে প্রকল্প থেকে সরাসরি কোনো আর্থিক লাভ পাওয়া যাবে না। প্রকল্পটির ওপর গত বছরের ৩০ নভেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভায় কিছু সংশোধন সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে ডিপিপি পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) একেএম ফজলুল হক জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং স্থানীয়ভাবে উদ্ভূত সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধানসহ এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে কার্যকরী স্থানীয় সরকার গঠন এবং একই ছাদের নিচে সরকারি সেবাসমূহ সম্প্রসারণ, শহরের সুবিধাদি গ্রামে সম্প্রসারণ, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
তিনি জানান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যেসব ইউনিয়ন পরিষদে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ বাকি আছে, সেগুলোর সবগুলোয় ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, প্রকল্পটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) এর অভীষ্ট নং- ১৬ এ ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য সব স্তরে কার্যকর, জবাবদিহিতাপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণ’ এবং অভীষ্ট নং-৮ এ ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন’ এর সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ। এইসব দিকে বিবেচনায় প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
Array