খুবি প্রতিনিধি: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুর চলাকালীন সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী কর্তৃক খুবির ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও দুই শিক্ষককে লাঞ্ছিত এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১১ মার্চ) বিকাল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের হাদি চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ঘটনার ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন। এসময় শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বক্তারা বলেন, গত শুক্রবার (৮ মার্চ) গাজীপুর সাফারি পার্কে সেশনাল ট্যূর চলাকালে বাসে ফেরার সময় সেখানে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী খুবির ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। এবিষয়ে তাদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা গালিগালাজ শুরু করে এবং বোতল ছুঁড়তে থাকে। এসময় সেশনাল ট্যুরের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বিষয়টি সমাধানের জন্য এগিয়ে গিয়ে তার পরিচয় দিলে তাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং হেনস্তা করে।
কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ইট নিয়ে তার দিকে তেড়ে আসে। এসময় তাঁকে উদ্ধার করতে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে ইট দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর মাথায় আঘাত করে এবং সেখানে থাকা শিক্ষার্থীদের কিল-ঘুষি ও গাছের কাটাযুক্ত ডাল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এতে খুবির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান সায়মন, হাসিবুজ্জামান, সাব্বির রহমান সাগর, হোসনে মোবারক, সুমিত কুমার সেন, প্রান্ত সরকারসহ দশজন শিক্ষার্থী আহত হয়। সেখানে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও আক্রমণ করা হয়।
এই ঘটনার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিপার্টমেন্টর শিক্ষার্থী আবির উজ জামান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়।
বক্তারা বলেন, ,আমাদের অনেক মেয়েরা মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক, যেন ভবিষ্যতে এহেন কর্মকান্ড ঘটাতে কেউ সাহস না পায়।’
বক্তব্যে ফারাবি, আবির, শিহাব, মারুফসহ এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের নাম উঠে আসে।
হামলার শিকার শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান সায়মন বলেন, ঘটনার শুরুতে আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা না শুনে আমাদের উপর আক্রমণ চালায় এতে আমাদের মেয়েরা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে ও আমরা মারাত্মকভাবে আক্রমণের শিকার হই। ওখানে নিরাপত্তা কর্মীরা আমাদেরকে বাঁচাতে এসেছিল কিন্তু তাদের উপর আক্রমণ চালায়। এমন পাশবিক কর্মকাণ্ড যারা ঘটায় তাদেরকে আমরা মানুষ মনে করিনা৷ তারা পশুর চেয়েও নিচু জাতের।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাহমিদ আলভি বলেন, আমি বাংলাদেশের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে চাই, যে ফিল্ডওয়ার্ক করতে গিয়ে এই ধরনের হ্যারাসমেন্টের শিকার হতে হয় সেখানে কতটুকু নিরাপত্তা নিশ্চায়ন করা হয়েছে? জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বলতে চাই দোষীদের সাব্যস্ত করে বিচারের আওতায় আনুন যেন ভবিষ্যতে এরকমের কর্মকাণ্ড কেউ ঘটাতে না পারে ও আমাদেরকে একটা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে দাঁড়াতে না হয়।
Array