• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • ‘এই আনন্দের জন্যই দশ বছরের কষ্ট’ 

     বার্তা কক্ষ 
    28th Jul 2023 6:30 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    পটুয়াখালী প্রতিনিধি: এস.এম.সিহান যখন নবম শ্রেণিতে উঠল, তার কিছু দিন আগেই মহামারীর কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুল খুললো । আর স্কুল খোলার কয়েক মাস পরই,নবম শ্রেণির ধাপ শেষ।

    তারও এক বছরের বেশি সময় পর মাকে জড়িয়ে ধরে এসএসসির ফল উদযাপনের সুযোগ হল তার। পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে এখন কলেজে পা রাখার স্বপ্নে বিভোর।

    স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চশিক্ষার পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়ার এই আনন্দ শুক্রবার দেখা গেল পটুয়াখালীর জুবিলী স্কুলে। তাদের সেই আনন্দে শামিল হলেন অভিভাবক আর শিক্ষকরাও।

    জুবিলী স্কুল রোডের মুল ফটকের সামনে সকল ১০ টা থেকেই ছিল ফলাফল প্রত্যাশী শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা বেলা সাড়ে ১০ টায় ফলাফল প্রকাশের পর বদলে যায় স্কুলের পরিবেশ।

    শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও স্কুলের মাঠে দল বেঁধে ঘুরে ঘুরে আর ড্রাম বাজিয়ে চললো উদযাপন। কারও চোখে দেখা গেল আনন্দাশ্রু।

    বন্যার ও বিভিন্ন কারণে এবার এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় মনযোগে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ফল পেয়ে খুশি এস.এম.সিহান।

    সে বললো,আমার প্রস্তুতি খুবই ভালো ছিল। কিন্তু পরীক্ষার মধ্যে বারবার সময় পরিবর্তন করার কারণে কিছুটা মনোযোগ হারাচ্ছিলাম। তার উপর এক পড়া বারবার পড়তেও ভালো লাগে না।
    “যেখানে ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়ে এখন আমাদের কলেজে থাকার কথা ছিল, এখানে আমাদের অনেকটা গ্যাপ হয়ে গিয়েছে। তবুও আমার এই রেজাল্ট সেই গ্যাপটা পূরণ করে দিয়েছে।”

    ভবিষ্যতে ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন দেখা এস.এম.সিহান পাশেই ছিলেন তার মা শাহানাজ পারভীন। সন্তানের ফলাফলে তার চোখেমুখে ছিল সন্তুষ্টির ছাপ।

    শাহানাজ পারভীন বলেন, “ও বায়োলজি বিষয়টা নিয়ে অনেক বেশি আগ্রহী। এই সাব্জেক্টে রেজাল্ট সবসময় ভালো করেছে। এখান থেকে ওর মনে একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে,কিন্তু সে ডাক্তার হতে চায় না।
    ওর ইচ্ছে ও ব্যারিস্টার হবে,ওর ইচ্ছেকে প্রধান্য দি তাই আশা করি আমার ছেলের এই স্বপ্নটা পূরণ হোক। আজকে আমার অনেক খুশির দিন। আমরা যা প্রত্যাশা করেছি, ফলাফলও তেমনই হয়েছে।”

    ফাতিমা বেগম নামের এক অভিভাবক বললেন, “এত আনন্দের জন্যই দশ বছর আমাদের বাচ্চারা কষ্ট করেছে। নানা প্রতিকূলতায় আমাদের মেয়েরা তাদের সাফল্যে পৌঁছেছে। বাচ্চারা রেজাল্ট ভালো করলে আমরা বাবা মায়েরাই বেশি খুশি হই।”

    শুক্রবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে স্কুলের ফলাফল তুলে ধরেন পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ মো:রুহুল আমিন।

    তিনি জানান, পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১০০% পাশের হার।মোট পরীক্ষার্থী ২৫৬ জন এদের মধ্যে জিপিএ-৫ ১৩৫ জন।২৫৬ জনের মধ্যে একজন ও ফেল করেনি এটি খুবই আনন্দের।

    অধ্যক্ষ মো:রুহুল আমিন বলেন, “করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা অনেক জটিলতায় ভুগলেও তারা আমাদের প্রত্যাশিত ফল এনে দিয়েছে। পাসের হার আগেরবারের চেয়ে বেড়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমি সত্যিই গর্ববোধ করছি।

    এ স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে জুনায়েদ ইসলাম। সে বললো, “করোনার সময় যে ধাক্কা গিয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে আমাদের স্কুলগুলো অনেক সহযোগিতা করেছে। আমরা অনলাইনে অনেক পড়াশোনা করেছি। বেশ কয়েকটা মডেল টেস্ট দিয়েছি। আমাদের শিক্ষকরা সবসময় আমাদের গাইড করেছেন। এ কারণেই রেজাল্ট এত ভালো হয়েছে।”

    ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে সাফল্য পাওয়া আরেক শিক্ষার্থী সুনান মৃধা বললো, তার অনুভূতি ‘ভাষায় প্রকাশ করার মত না’।

    ভবিষ্যতে নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখা এই কিশোরী বললো, “যেরকম পরীক্ষা দিয়েছি, সেরকম ফলাফল পেয়েছি। এটা সত্যি আনন্দের।”

    দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করে মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, “একটা সময় ছিল, যখন রেজাল্টের দিন মানেই ব্যান্ড পার্টি, শিক্ষার্থী ও অভিভাকদের ভিড়। তখন রেজাল্ট আনতে আমরা বোর্ডে লোক পাঠাতাম। রেজাল্ট এলে পরে তা আবার আমরা এনভেলপে করে হাতে হাতে দিতাম। সে এক অন্যরকম দিন ছিল। এই দিনটা মানেই মুখরিত ক্যাম্পাস।

    “এখন আর তা হয় না, কারণ ছাত্র-ছাত্রীরা আমাদের আগেই ঘরে বসে রেজাল্ট জেনে যায়। এখন যে মেয়েটা বাসায় বসেই রেজাল্ট হাতে পেয়ে যায়, সে আবার কষ্ট করে স্কুলে আসবে কেন! তাই গত কয়েকবছর ধরেই, মানে যখন থেকে অনলাইনে রেজাল্ট জানা যায়, তখন থেকে আর ওরা সেভাবে আসে না।”

    এ বছর ৩০ এপ্রিল এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। ২৫ মে পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বোর্ডের ১৪ মে’র পরীক্ষা এবং সব বোর্ডের ১৫ মে’র পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। পরে ১৪ মে’র পরীক্ষা ২৭ মে এবং ১৫ মে’র পরীক্ষা ২৮ মে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সারাদেশে নিয়মিত ও অনিয়মিতসহ মোট ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    July 2023
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930
    31