আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ ফরম্যাট হিসেবে বিবেচনা করা হয় টেস্ট ম্যাচকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের দাপটে তাদের সেই মর্যাদা হারাতে বসেছে। সে কারণে কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টির দৌরাত্ম্য কমাতে অনেকদিন ধরেই আহবান জানিয়ে আসছেন। তবে এবার ওয়ানডে ম্যাচ কমানোর পরামর্শ দিয়েছে এমসিসির ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি। তার বদলে তারা সাদা পোশাকের ম্যাচ বাড়ানোর আহবান জানিয়েছে।
ভারতের মাটিতে আগামী ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এছাড়াও ২০২৭ সাল পর্যন্ত চলবে আইসিসির নতুন ক্রিকেট চক্র। সে অনুসারে ওয়ানডে সুপার লিগ এবং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ খেলবে সংস্থাটির পূর্ণ সদস্য দেশগুলো। সে কারণে ২০২৭ সালের পর তাদের এই পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে বলেছে এমসিসি।
ইংল্যান্ডে চলমান অ্যাশেজ সিরিজের ফাঁকে লর্ডসে মিলিত হয়েছিলেন এমসিসি কমিটির ১৩ সদস্য। সেখানে তারা ওয়ানডে ম্যাচ কমানো হলে এর মান আরও বাড়ার আশাপ্রকাশ করেন। তাদের মতে, অনেক ক্রিকেটারই তড়িঘড়ি করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নাম লেখাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে ওডিআই কমে গেলে ক্রিকেট ক্যালেন্ডারে অনেকটা জায়গা ফাঁকা হবে। পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার বেশি সুযোগ পেলে, ক্রিকেটাররাও হয়তো তড়িঘড়ি অবসরের সিদ্ধান্ত নেবেন না।
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইক গ্যাটিংয়ের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের কমিটি আশা করছে, ‘ওডিআই ক্রিকেটের সংখ্যা কমলে, তার মান আরও বাড়বে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ওডিআই ক্রিকেট সরিয়ে দেওয়া যেতে পারে। প্রতিটি বিশ্বকাপের এক বছর আগে থেকে করা যেতে পারে ওডিআই সিরিজ। এতে ক্রিকেট ক্যালেন্ডারে জায়গা তৈরি হবে। যেটা কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যাবে।’
একইসঙ্গে এমসিসি প্যানেল টেস্ট ক্রিকেটকে সুরক্ষিত রাখতে এবং মহিলাদের ক্রিকেটকে আরও জনপ্রিয় করতে কৌশলগত তহবিল বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে। এমসিসি-র বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে, ‘কমিটি ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বাইরের দেশগুলিতে টেস্ট ক্রিকেটকে টিকিয়ে রাখার বিষয় নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।’
টি-টোয়েন্টির জনপ্রিয়তার মাঝে ক্রিকেটের অন্য ফরম্যাটগুলো এখন যেন ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে বলে মত এমসিসির। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জেসন রয়। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেট লিগ (এমএলসি) খেলার জন্য তিনি ইংল্যান্ডের সঙ্গে বর্ধিত চুক্তির একটি অংশ অগ্রাহ্য করেছেন। ট্রেন্ট বোল্টও গত বছর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে তার কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বের হয়ে এসেছিলেন। অন্যদিকে আইপিএল তার ফ্র্যাঞ্চাইজি টিমগুলিকে অন্যান্য লিগেও দল কেনার সঙ্গে দুই মাসের উইন্ডোতে প্রসারিত করেছে। এত খেলোয়াড়দের বছরব্যাপী টি-টোয়েন্টি চুক্তির প্রস্তাব দেওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
Array