চাপাইনবয়াবগঞ্জ প্রতিনিধি: আগামী ঈদের পরে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমকে গামছা পরিয়ে বিদায় করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন।

সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ভোলাহাটের মেডিকেল মোড়ে  উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের শান্তি সমাবেশে তিনি এমন বক্তব্য দেন। ২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের প্রকাশিত ভিডিওটিতে পুরো সময়জুড়ে ইউএনওকে নিয়ে বিষোদগার করেন তিনি।

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন বলেন, আমাকে বরখাস্ত করার জন্য উৎপাত চলছে। আমার কর্মচারী চালকের ওভারটাইম বেতন দেয়া হচ্ছে না। শুধু জামায়াত-বিএনপি নয় প্রশাসনে বসে শেখ হাসিনার নামে যারা চলছে বর্তমান ইউএনও এ ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত।

ইউএনওকে হুঁশিয়ারি করে চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ঈদের পরে ইউএনও উম্মে তাবাসসুমকে গামছা পরিয়ে এখান থেকে বিদায় করা হবে। এখানে দাঁতভাঙা জবাব কেউ দেখেনি, সবাই চুপচাপ আছে, ইনশাআল্লাহ ঈদের পরে সেই রুপ দেখতে পাবে। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানকে সরানোর পাঁয়তারা করছো। ঈদের পরে তোমার চৌদ্দ গুষ্টির দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা এই ইউএনওকে কন্ট্রোল করুন, নয় বিদায় করুন। ঈদের পরে জামায়াত-বিএনপির আন্দোলন তীব্রতর হলে এই ইউএনও ভোলাহাটের মাটিতে থাকলে আমাদের আওয়ামী লীগ-যুবলীগ, ছাত্রলীগের অর্ধেক নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠাবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, সামনে ২৫ তারিখের মধ্যে কোন স্টেপ না নেয়া হলে যতগুলো প্রকল্পের কাজ চলছে আমি কোন চেয়ারম্যান-মেম্বারের প্রকল্পে স্বাক্ষর করবো না। এতে টাকা ল্যাপ্স গেলে টাকা ল্যাপ্স যাবে।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন শাহ, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গরিবুল্লাহ দবিরসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম বাবলু। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন পরে মন্তব্য করবেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এদিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম বাবু মুঠোফোনে বলেন, চেয়ারম্যান ইউএনওকে হুমকি দিবে বিষয়টি কারও জানা ছিল না। প্রকাশ্যে হুমকি দেয়া ঠিক হয়নি। এনিয়ে আমরা বিব্রত।

অপরদিকে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমের বক্তব্য জানতে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। এমনকি বক্তব্য জানতে চেয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোন উত্তর মিলেনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহা: জিয়াউর রহমান, একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রকাশ্যে নারী ইউএনওকে হুমকি দেয়া দল সমর্থন করে না। আমরা এমন ঘটনায় বিব্রত। দ্রুত দলীয় ফোরামে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানের বক্তব্য দেয়ার ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।