বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রক্ত ধর্ম চিনে না, জাত-পাত চিনে না, বৈষম্য চিনে না। রক্ত শুধু বুঝে, “ রক্ত মানেই জীবনের স্পন্দন”। আজ ১৪ই জুন, বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। বিশ্বব্যাপী রক্তদাতা দিবসের উদ্দেশ্য হলো মানুষের মধ্যে রক্তদাতাদের ও রক্তদানের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণের মাঝে সচেতনতা ও উৎসাহ বৃদ্ধি করা, নতুন রক্তদাতা গঠনের প্রচার করা, রক্তদাতাদের প্রশিক্ষণ ও উৎসাহ দেওয়া এবং নিয়মিত রক্তদানে উৎসাহিত করা। আর্তমানবতার সেবায় এবং জীবনের সংকটকালীন অবস্থায় জীবন বাঁচানো বিশ্বের সকল রক্তদাতা নামক সুপারহিরোদের স্মরণেই আজ এই রক্তদাতা দিবসের আয়োজন।
বাঁধন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) জোনাল পরিষদ এমনই একটি রক্তদাতা সংগঠন। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ব্যাপকভাবে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। এই অঞ্চলে সিজার, এক্সিডেন্টাল কিংবা অপারেশনাল রোগীর সংখ্যাও বেশি। যাদের বেশিরভাগেরই জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন পড়ে। ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর এবং নেত্রকোণা জেলার মানুষের জরুরি রক্তের প্রয়োজনে বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের বিশ^স্ত জায়গা বাকৃবি জোনাল পরিষদ । ২০০০ সালে বাঁধন, বাকৃবি জোনাল পরিষদের উদ্ভোধনের পর থেকেই এইসব জেলার মানুষ নিয়মিতভাবে বাঁধনের সুফল ভোগ করে আসছে। আজ পর্যন্ত মানুষের কাছে প্রায় ৩৩০০০ ব্যাগ বিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করেছে। বিগত ২৩ বছরে ৩৩০০০ টি জীবন, ৩৩০০০ টি পরিবার এবং ৩৩০০০ স্বপ্ন বাঁচাতে প্রত্যক্ষ অবদান রেখেছে বাঁধনের বাকৃবি জোনাল পরিষদ।
বুধবার (১৪জুন) বিশ্বরক্তদাতা দিবস উপলক্ষে ও নতুন রক্তদাতা তৈরির লক্ষে হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী হলের বাঁধন ইউনিটের পক্ষ থেকে নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে চা-চক্রের আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ্বরক্তদাতা দিবসে রক্তদানের অনুভূতি নিয়ে বাকৃবি জোনাল পরিষদের হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী হল ইউনিটের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আশিকুজ্জামান বলেন, ‘আমি প্রথম রক্ত দেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর এবং বাঁধন সম্পর্কে তখনই প্রথম জানতে পারি। মূলত মানবসেবায় নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা এই সংগঠনের প্রতি ভালোলাগা তখন থেকেই, যার ফলশ্রæতিতে আজ আমার আরেকটি পরিচয় আমি বাঁধনকর্মী।
বাঁধনের মাধ্যমে আমি ৪ বার রক্ত দিয়েছি। প্রতিবার রক্তদানের পরে, প্রিয়জনের সুস্থতার আশায় উদ্বিগ্ন মানুষগুলোর হাসিমুখ ও স্বস্থির নিঃশ্বাস আমাকে বাঁধনের হয়ে কাজ করতে নতুনভাবে উদ্দীপনার জোগান দেয়।
মানুষের মনের এই গভীরতম স্বস্তির নিঃশ্বাসের অনুভূতির স্বাদ নিতে অবশ্যই একবার হলেও রক্ত দেয়া উচিত। বিশ্বরক্তদাতা দিবসে আমি পৃথিবীর সকল রক্তদাতা এবং বাঁধনকর্মীর প্রতির জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। তারা যেভাবে নীরবে এবং লোকচক্ষুর আড়াল থেকেই দিনের পর দিন মানবতার তরে সবচেয়ে মহামূল্যবান কর্মটি সম্পাদন করে যাচ্ছেযা সত্যিই প্রশংসনীয়।’
Array