• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • পর্তুগালের সাও মিগেল দ্বীপ ও অদ্ভুত চায়ের গল্প 

     বার্তা কক্ষ 
    30th May 2023 9:52 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    সময় তখন ঘড়িতে আনুমানিক দুপুর ৩টা ১২ মিনিট। আমরা তখন দুপুরের খাবার শেষ করে আজোরেশের আরেক আশ্চর্য ফারনাশের দিকে রওনা হলাম। বহুল প্রতীক্ষিত আগ্নেয়গিরির সন্ধানে।

    কী আশ্চর্য! রেস্টুরেন্ট থেকে গাড়িতে আনুমানিক ১০ কি ১৫ মিনিট যাওয়ার পর দেখি চারিদিকে ধোঁয়া আর টগবগ শব্দ শোনা যাচ্ছে। আমাদের ট্যুর গাইড গাড়ি পার্কিংয়ে রেখে আমাদের নামিয়ে দিল আর সে গাড়ি থেকে কিছু চায়ের কাপ আর গ্রিন টি নিয়ে এলো। আমাদের তো চারপাশের দৃশ্য দেখে বিস্ময়ের সীমা নেই। কিছু ছবি আর ভিডিও করে নিলাম। তারপর আশপাশে ঘুরে ঘুরে দেখতে আর ট্যুর গাইডের বলা বিবরণ শুনতে থাকলাম, বিস্মিত হতে থাকলাম। এক এক গর্তের পানির এক এক তাপমাত্রা। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সেখানকার পানিতে ৯৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মনে হয়, একেই বলে ভয়ংকর সৌন্দর্য।

    দেখতে দেখতে আমরা এটাও শুনলাম, গত সপ্তাহেই নাকি এক বিদেশি মা আর তার সন্তান আশপাশে থাকা রেস্ট্রিকশন ফলো না করায় অসতর্কতাবশত সেখানকার উত্তপ্ত মাটি আর পানির মধ্যে পড়ে অনেকটা দগ্ধ হয়।

    সেখানে এক একটা আগ্নেয়গিরির গর্তের পানির স্বাদ এক এক রকম। কোন গর্তের পানি স্পারকেলিং ওয়াটারের মতো, কোনটা গ্যাস দেওয়া লেবু পানির মতো আর কোনো পানির স্বাদ চিনি ছাড়া স্প্রাইটের মতো। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, এত গরম পানি খাচ্ছি কীভাবে আমরা? বিস্ময় তো এখানেই। তপ্ত গরমের মাঝেই আবার আল্লাহর কুদরতি শীতল পানি সুবহানাল্লাহ!

    যাই হোক, আমরা এক একটা পানির স্বাদ নিতে নিতে বিস্ময়ের ঘোর কেটে ওঠার আগেই ট্যুর গাইড ডাক দিল ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের পানির কাছে। আমরা হা করে তাকিয়ে আছি কি করে সে সেটা দেখার জন্য। আমরা ছিলাম তিন জন। সে একে একে ৩টা গ্লাসে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা যুক্ত গরম পানি ভরে সকালে চা কারখানা থেকে কিনে আনা গ্রিন টি সেই গরম পানিতে শুধু তিন বার ডোবারো, তারপর শুধু ২ সেকেন্ডের অপেক্ষা।

    কাপে রাখা গরম পানি অদ্ভুত ল্যাভেন্ডার রং ধারণ করল। আকস্মিক মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো ‘ও দয়াময় এই ছোট্ট পৃথিবীতে কত বিস্ময় লুকিয়ে রেখেছ তুমি, তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতার কোনো শেষ নেই। সুবহানাল্লাহ।’

    পরে চা খেলাম আর খেতে খেতে জানতে পারলাম এ বিস্ময়ের কারণ কী? শুনলাম গাইডের মুখেই। এর সাইন্টিফিক কারণ হলো– অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ গ্রিন টির সঙ্গে বিক্রিয়া করে উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরির পানিতে মিশ্রিত আয়রন এবং অ-অক্সিডাইজড অ্যাসিড উপাদানের কারণে মিশ্রণটি ভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো প্রতিসরণ করে। যা আমাদের চোখে বেগুনি রং হিসেবে ধরা দেয়। পানিতে থাকা খনিজ পদার্থগুলোও নিশ্চিত করে যে চা তেতো না হয়ে যায়, এমনকি চা-টা দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রেখে দেওয়া যায়। গ্রামের কেন্দ্রীয় অংশে বিভিন্ন তাপমাত্রা এবং রাসায়নিক সংমিশ্রণের প্রায় ৩০টি তাপীয় জলাধার রয়েছে, যার অধিকাংশই খনিজ এবং আয়রন সমৃদ্ধ জল। অনেক উষ্ণ প্রস্রবণ, উচ্চ মাত্রার সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, বোরন, ফ্লোরিন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড রয়েছে।

    যাই হোক, এই আশ্চর্য দ্বীপপুঞ্জের হাজার বিস্ময়ের মধ্যে অন্যতম সাও মিগেল দ্বীপ নিয়ে কিছু কথা। সাও মিগেল আজোরস দ্বীপপুঞ্জের নয়টি দ্বীপের একটি। পর্তুগালের অন্তর্গত, আটলান্টিক মহাসাগরের এই দ্বীপপুঞ্জ লিসবন থেকে প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। নয়টি দ্বীপের সবকটিতেই আগ্নেয়গিরির উৎপত্তি এবং তাপীয় স্প্রিংস রয়েছে, তবে সাও মিগুয়েলের মধ্যে সবচেয়ে অসাধারণ কিছু রয়েছে।

    সাও মিগুয়েল দ্বীপের পূর্ব অংশে ছোট শহর ফুর্নাসে রয়েছে প্রাগৈতিহাসিক উষ্ণ প্রস্রবণ এবং বুদ্বুদ করা মাটির পুল, বহু রঙের ভূ-তাপীয় ক্ষেত্র এবং সবুজ পাহাড়ের পটভূমিতে সবুজ গাছপালা আর অসাধারণ ফুল আর পাখি কোলাহলপূর্ণ রাজধানী পোন্তা ডেলগাদা থেকে মাত্র ৪০ মিনিটের দূরত্বে দর্শকরা ফুর্নাসের আগ্নেয় উপত্যকায় প্রবেশ করতে পারে।

    কয়েক শতাব্দী ধরে স্থানীয়রা বিভিন্ন উষ্ণ প্রস্রবণ থেকে পানি ব্যবহার করে আসছে বিভিন্ন কাজের জন্য যেমন– রান্না, পরিষ্কার করা এবং ভেষজ আধান তৈরি করা। অন্যদিকে, অন্যান্য স্প্রিংস, বিপদ চিহ্ন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পাথর দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কিছু সত্যিই খুব গরম এবং যে গ্যাসগুলো বেরিয়ে আসে তা ক্ষতিকারক।

    লেখক : পর্তুগাল প্রবাসী উদ্যোক্তা

     

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ