গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জিনের বাদশা প্রতারক চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে স্বর্ণালঙ্কারসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের দুলু মিয়ার ছেলে মোর্শেদুল ইসলাম (৩২) ও একই উপজেলার মালাধার কালিপাড়া গ্রামের রেজবর আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৫০)। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, প্রতারক চক্রটি বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল আলিমের মোবাইল নম্বরে ফোন করে নিজেকে আল্লাহর অলী ও দরবেশ পরিচয় দিয়ে তাকে সালাম দেয় এবং বলে যে, ‘বাবা তোর ভাগ্যে বহু ধনরত্ন দেখা যাইতেছে। তুই বড় ভাগ্যবান। তুই ছোটবেলা থেকে অনেক পরিশ্রম করিতেছিস। তোর প্রাপ্য ধন-সম্পদ সাত রাজার ধন আল্লাহর নির্দেশে ৭শ জন জিন পাহারা দিতেছে। এই ধন-সম্পদ তুই যদি পাইতে চাস, তাহলে তোকে আল্লাহর ওয়াস্তে মসজিদে কোরআন শরীফ, জায়নামাজ, টুপি দান করতে হবে।’ এইভাবে প্রতিনিয়ত গভীর রাতে মোবাইলে কথা বলতে থাকে এবং তাকে মূল্যবান ধন-সম্পদ পাওয়ার লোভ-লালসা দেখাতে থাকে। এক পর্যায়ে লোভ লালসার ফাঁদে ফেলে বিকাশের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। পরে আরও বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে ৪ আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ৪ আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের বালা, ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, ১টি মালা, ২ আনা ওজনের স্বর্ণের ১টি টিকলী, ২ আনা ওজনের ১টি আংটিসহ অনুমানিক দুই লাখ টাকার গয়না হাতিয়ে নেয়। পরে ভুক্তভোগী আব্দুল আলিম বিষয়গুলো প্রতারণা বুঝতে পেরে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
শুক্রবার (২৬ মে) দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ থানা চত্বরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান।
এ মামলাটি রুজু হওয়ার পর গোবিন্দগঞ্জ থানার একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে জ্বীনের বাদশা প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের কাছ থেকে স্বর্ণের এক জোড়া বালা, এক জোড়া কানের দুল, এক জোড়া রুপার নুপুর, নগদ আট হাজার টাকা, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করে।
প্রেস বিফ্রিংয়ে গাইবান্ধা জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার উদয় কুমার সাহা, গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ইজার উদ্দিন, ওসি তদন্ত বুলবুল ইসলাম, এসআই সুজন কবির, এসআই রাশেদুল ইসলামসহ অন্যান্য অফিসারবৃন্দ ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Array