মিশরের জনপ্রিয় কারী শায়খ আব্দুল্লাহ কামিল ইন্তেকাল করেছেন। তিনি মাত্র ৩৭ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। মরহুম এই কারীর ঘনিষ্ঠজনের বরাতে সৌদি সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া জানিয়েছে, মিশরের এই জনপ্রিয় কারী যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে নামাজে ইমামতি করার সময় ইন্তেকাল করেন।
মরহুম শায়খ আবদুল্লাহ এই রমজানে ২৪ বার পবিত্র কোরআন খতম করেছেন। গত বছর তিনি ২৮ বার খতম করেছিলেন।’
শায়খ আবদুল্লাহ কুয়েত, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ গত রমজানে তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের মুসলিম কমিউনিটি সেন্টারে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শায়খ আবদুল্লাহ আহমদ কামিল ১৯৮৫ সালে মিসরের আল-ফাইউম প্রদেশের ইউসুফ সিদ্দিক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জন্মগতভাবেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছিলেন। ছোটবেলায় ব্রেইল পদ্ধতিতে পুরো কোরআন হিফজ করেন। এরপর ২০০৫ সালে আল-ফাইউম বিশ্ববিদ্যালয়ের দারুল উলুম কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ২০১৫ সালে তিনি আল-ফজর চ্যানেলে সম্প্রচারিত কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
আমেরিকা যাওয়ার কয়েকদিন আগে ১০ এপ্রিল কারী আবদুল্লাহ কামিলের একটি সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। তিনি তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করে লিখেন, আল্লাহ আমাকে একটি পুত্র দিয়েছেন যার নাম আমি সুফিয়ান রেখেছি।
তা ছাড়া বিভিন্ন সেন্টার ও টিভি-চ্যানেলে তিনি নিয়মিত ইসলামী আলোচনা করতেন। মনমুগ্ধকর তিলাওয়াতের জন্য শায়খ আবদুল্লাহ অনলাইন ও অফলাইন সবখানে খুবই জনপ্রিয়।
ইউটিউব চ্যানেলে তাঁর তিলাওয়াতের অনেক ভিডিও রয়েছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তার তিলাওয়াত নিয়মিত সম্প্রচার হয়।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন আরব দুনিয়ার বরেণ্য ইসলামী ব্যক্তিত্বরা। মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদিস বিভাগের অধ্যাপক ও মিসরীয় কারিদের শায়খ ড. আহমদ ঈসা আল-মাসারাবি শোক জানিয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘মহান আল্লাহ শায়খ আবদুল্লাহ কামিলের ওপর রহম করুন। তাঁর করবকে আলোকিত করুন এবং জান্নাতে উঁচু মর্যাদা দিন।’
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ড. মুহাম্মদ আল-সাগির লিখেছেন, ‘শায়খ আবদুল্লাহ কামিল যুক্তরাষ্ট্রে ইন্তেকাল করেছেন। সেখানেই তিনি রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়িয়েছেন। সুরলিত কণ্ঠে তাঁর তিলাওয়াত ও আবৃত্তি ছিল খুবই শ্রুতিমধুর। তিনি স্বরচিত অনেক কবিতা আবৃত্তি করেছেন।’
বিশ্বনন্দিত কারি শায়খ মাশারি রাশিদ আল-আফাসি লিখেছেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি শায়খ আবদুল্লাহ কামিলকে ক্ষমা করুন। তাঁকে জান্নাতে উঁচু মর্যাদা দান করুন। ঠাণ্ডা পানি ও বরফ দিয়ে তাঁকে পবিত্র করুন এবং তাঁর পরিবার ও স্বজনদের উত্তম বিনিময় দিন।’
Array