ইয়েমেন গত ৯ বছরের বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রথমবারের মতো বন্দি বিনিময় হয়েছে। শুক্রবার উভয় পক্ষের প্রায় ৯০০ বন্দিকে মুক্তি এবং বিনিময় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি)।
বন্দি বিনিময়ের এই ঘটনা সৌদি আরব ও হুথি গোষ্ঠীর মাঝে চলমান শান্তি আলোচনায় এক গুরুত্বপূর্ণ আস্থা তৈরির মতো পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হুথিদের পরিচালিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশনের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, শুক্রবার দুপুরের দিকে প্রথম দু’টি ফ্লাইট একযোগে সরকার-নিয়ন্ত্রিত শহর এডেনে ৩৫ জন এবং হুথি-নিয়ন্ত্রিত রাজধানী সানায় ১২৫ জনকে নিয়ে অবতরণ করেছে।
বন্দিদের মুক্তি এবং বিনিময়ের প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আইসিআরসি। আন্তর্জাতিক এই সংস্থা বলেছে, আগামী কয়েক দিন ইয়েমেন ও সৌদি আরবের ছয়টি শহরে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের (আইসিআরসি) বিমানগুলো ব্যবহার করা হবে।
ইয়েমেনে লড়াইরত যুদ্ধরত পক্ষগুলো গত মাসে সুইজারল্যান্ডে এক বৈঠকে ৮৮৭ বন্দির মুক্তির বিষয়ে রাজি হয়েছিল। পরে অন্যান্য বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মে মাসে আবারও বৈঠকে বসার ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছায় তারা।
আইসিআরসির আঞ্চলিক পরিচালক ফ্যাব্রিজিও কার্বোনি বলেছেন, ‘বৃহত্তর রাজনৈতিক সমাধানের জন্য বন্দিদের এই মুক্তি আমাদের গভীর আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে।’
ইয়েমেনের দীর্ঘদিনের সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং লাখ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয়েছেন। এই যুদ্ধকে সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ হিসাবে দেখা হয়।
ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা ২০১৪ সালে ক্ষমতাসীন সরকারকে হটিয়ে সানার দখলে নেয়। পরে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে।
গত মাসে রিয়াদ এবং তেহরান ২০১৬ সালে ছিন্ন করে ফেলা কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনে রাজি হয়। এর ফলে দীর্ঘদিনের ইয়েমেন সংঘাতের অবসান নিয়ে আশা তৈরি হয়।
বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের একটি প্রতিনিধি দল সানায় হুথি বিদ্রোহীদের সাথে শান্তি আলোচনা শেষ করেছে। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা বলেছেন, আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য দূর করার জন্য আরও আলোচনার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তারা।
Array