বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে প্রশাসন। আজ রবিবার সকালের দিকেও বেশ কিছু গুলির আওয়াজ শোনা যায় বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। তুমব্রু জিরো লাইনে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি (সরদার) দিল মোহাম্মদ জানিয়েছেন শুক্রবার রাতে গোলার আঘাতে ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা যুবক মারা যাওয়ার পর সেখানে থাকা পরিবারগুলো এখন আতঙ্ক উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। নতুন করে আবার আক্রমণের শিকার হতে পারে। এ আতঙ্কে রাতের বেলা অনেকেই নিরাপদ জায়গায় সরে থাকে। তবে শুক্রবারের ঘটনার পর থেকে এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে সীমান্ত এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিজিবির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। টহলও বাড়িয়েছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজনদের ছাড়া বহিরাগত লোকজনদের সীমান্ত এলাকায় যাতায়াত করতে দিচ্ছে না বিজিবি। সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্তের কারণে কাঁটাতার সংলগ্ন জমি ও পাহাড়ে কৃষকরাও ভয়ে যেতে পারছেন না। চাষ করা জমিগুলোতে পরিচর্যা করতে পারছেন না কৃষকরা। গত এক মাস ধরে সীমান্ত পরিস্থিতির কারণে সেখানকার কৃষক ও জুম চাষিরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
সীমান্তের কাঁটাতার বেড়া সংলগ্ন তুমব্রু, ঘুনধুম, হেডম্যান পাড়া, ফাত্রা ঝিড়ি, রেজু আমতলী এলাকায় বসবাসকারী এসব পরিবারের প্রায় দেড় হাজার লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।
ঘুনধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন আজ রবিবার প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বৈঠকে জানানো হয় ঘুমধুম ইউনিয়নে কোন আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় পরিবারগুলোকে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি কঠিন হয়ে যাবে। এছাড়া স্কুলগুলোতেও থাকার কোন পরিবেশ নেই। এ পর্যায়ে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। তবে সীমান্ত ঘেষা বসবাসকারী পরিবারগুলো এখন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে বলে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এখনো সীমান্তের ওপার থেকে থেমে থেমে গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানিয়েছেন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার জরুরী একটি কোর কমিটির বৈঠক করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনায এড়াতে সীমান্তে বসবাসকারী লোকজনদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
Array