জীবনসঙ্গী গুরমিত, দুই মেয়ে লিয়ানা ও দিবিশাকে নিয়ে সদ্য শ্রীলঙ্কা থেকে ফিরেছেন দেবিনা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদেশ ভ্রমণ করে আসার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। তাই বাধ্য হয়ে দুই মেয়ে ও স্বামীর কাছ থেকে এখন আলাদা থাকছেন তিনি। এই ভাইরাস কতটা ক্ষতি করতে পারে শরীরের?
দুই ছরের করোনা মহামারি পর্বে নিজেকে বেশ কিছুটা গুটিয়ে রাখার পর আবার দাপটে ফিরতে চলেছে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু ভাইরাস। মোট চার ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস হয়— এ, বি, সি ও ডি। ভারতে এ ও বি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের দাপটই বেশি। টাইপ এ ইনফ্লুয়েঞ্জা অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাস, এর প্রভাবে মহামারির পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। পাখির শরীর থেকে এই রোগ ছড়ায়। অন্যদিকে টাইপ বি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের অনেক উপরূপ রয়েছে। টিকা করণের মাধ্যমে এই রোগের ঝুঁকি এড়ানো যায় না। টাইপ এ, বি’র তুলনায় বেশি মারাত্মক।
উপসর্গ:
এই ভাইরাসে আক্রান্তদের শরীরে জ্বর থাকে ও গায়ে-গলায় ব্যথা থাকে। সর্দি-কাশি বেশি হয়। বমি হতে পারে। শরীর দুর্বল থাকে। স্বাদ-গন্ধ যায় না। রুচি না-ও থাকতে পারে। শ্বাসকষ্ট হয় না। মানুষের হাঁচি, কাশির মাধ্যমেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাস মারাত্মক ও ছোঁয়াচে। তাই আক্রান্ত রোগীকে আলাদা থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
এই রোগ থেকে বাঁচতে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করবেন?
১) ফ্লু প্রতিরোধের জন্য শিশু ও পূর্ণবয়স্কদের আলাদা দুই টি টিকা রয়েছে। প্রতি বছর সময় মতো সেই টিকাগুলো নেওয়া জরুরি। তবে ফ্লু-তে আক্রান্ত হওয়ার পর এই টিকা নিলে বিশেষ লাভ হবে না। আগেই নিতে হবে।
২) হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে পানি বা সাবানের কোনো বিকল্প নেই। তবু যদি সব জায়গায় জল, সাবানের ব্যবস্থা না থাকে, তখন স্যানিটাইজ়ারের ওপর ভরসা করতে হবে। কিন্তু হাত না ধুয়ে শুধু খাবার খাওয়া নয়, চোখ-মুখ বা নাকও স্পর্শ করা যাবে না।
৩) রাস্তাঘাটে বা ভিড়ের মধ্যে সংক্রমিত রোগীরা মিশে থাকেন। তাদের আলাদা করে চেনার উপায় থাকে না। তাই মাস্ক পরার অভ্যাস পুনরায় শুরু করতে হবে।
ফ্লু-তে শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। বড়রা নানারকম সাবধানতা অবলম্বন করতে পারলেও ছোটদের এই সব নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য করানো খুব কঠিন। তার ওপর অপুষ্টিজনিত সমস্যা থাকলে এই রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করা মুশকিল।
চিকিৎসকদের মতে, করোনা পরবর্তী সময়ে শিশুদের ফ্লুতে আক্রান্তের হার প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। বড়দের নানা ধরনের বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকানো গেলেও ছোটদের কিন্তু বোঝানো মুশকিল। তাই তাদের সময় মতো টিকা দেওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া, পর্যাপ্ত জল বা তরল খাওয়া, নিয়মিত শরীরচর্চা করানোর অভ্যাস করাতে হবে।
Array