কক্সবাজার ও রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিদিন টন পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। যে কারণে পরিবেশ নষ্টের পাশাপাশি ফসলি জমির ক্ষতি হচ্ছে অপূরণীয়। তাই জীববৈচিত্র বাঁচাতে সব ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী দুটি সংগঠন।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সিসিএনএফ আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কক্সবাজারের প্রধান নদী বাঁকখালী পলিথিনে ভরা। পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনাও ফেলা হচ্ছে এখানে। এছাড়া সারা দেশই যেন আবর্জনার ভাগাড়। সরকার প্লাস্টিকবিরোধী আইন করেছে। কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন নাই। পলিথিন কারখানাগুলো অবৈধভাবে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। অবিলম্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। সরকারের প্রণীত আইন বাস্তবায়ন করা হোক। বিকল্প সৃষ্টির মাধ্যমে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এজন্য সব মহলের সদিচ্ছা থাকা দরকার।
সিসিএনএফ কো-চেয়ার ও পালসের প্রধান নির্বাহী আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সুনীল সম্পদ রক্ষা করতে হলে আমাদের প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা প্রয়োজন। এর জন্য চাই সরকারি আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন।
বাপা সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) প্রধান ফিলিফ গ্রাভি এবং আইএসসিজির প্রধান সমন্বয়কারী অর্জুন জেইনকে আমরা সিসিএনএফ এর পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের আহ্বান করেছি। আশা করি উনারা এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, গবেষণা অনুযায়ী একটি প্লাস্টিক দ্রব্য পচতে প্রায় ৭০ বছর সময় লাগে। প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে যথাযথ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। প্লাস্টিক মাটির নিচে থাকলে বৃষ্টির পানি নিচে যেতে পারে না। সাম্প্রতিককালে আমরা দেখতে পাচ্ছি কক্সবাজারের অধিকাংশ এলাকার পানি লবণাক্ত হয়ে গেছে।
আরও বলা হয়, সমুদ্র তলদেশের প্রায় ৪০ শতাংশ অংশ দখল করে আছে এই প্লাস্টিক। বিজ্ঞানীরা আশংকা প্রকাশ করছেন যে, ২০৩০ সালের দিকে সাগরতলে মাছের চেয়েও প্লাস্টিক পাওয়া যাবে বেশি। আর প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ সামুদ্রিক প্রাণী প্লাস্টিকের কারণে মারা যায়। প্লাস্টিক উৎপাদন এবং বিপনন বন্ধ করতে গেলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তি’র প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক কবি রহুল কাদের বাবুল, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মকবুল আহমেদ, জলবায়ু কমিটির নেতা কামাল উদ্দিন রহমান, কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার উপকূলীয় সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি স.ম ইকবাল বাহার চৌধুরী, বাপার সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম নজরুল ইসলাম, ছায়ানীড়ের কল্লোল দে, স্বপ্নজালের শাকির আলম, পালস বাংলাদেশ সোসাইটির প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিম এবং সিসিএনাফের কো- চেয়ার ও কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী।
Array