নেত্রকোনা প্রতিনিধি;
ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছরেও নেত্রকোণার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্মিত হয়নি স্থায়ী কোনো শহীদ মিনার। এ অবস্থায় শহীদ মিনারহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়েই কলাগাছ বা বাঁশ-কাঠ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এমন দৃশ্য দেখা গেছে নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার কৈলং শেখ বাড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক শেখ আবুল কালাম আজাদ জানান, ১৯৯৮ সালে এক একর জায়গা নিয়ে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বয়স ২৫ বছর চলছে। এতে প্রধান শিক্ষকসহ পনেরজন শিক্ষক ও চারজন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় দুইশর মতো।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে এমপিওভুক্ত হয়েছে। তবে এখনো কোনো পাকা ভবন নির্মিত হয়নি। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাবে এখানে টিউবওয়েল ও ভালো টয়লেট নেই। নেই স্থায়ী শহীদ মিনারও। তাই প্রতি বছর ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কলাগাছের অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করতে হয়। এবারও তাই করা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে।
তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন, বেশ কয়েকবার আমাদের বিদ্যালয়ের টিনের চাল ঝড়ে উড়ে গেছে। কিন্তু আমরা কোনো রকম বরাদ্দ পাইনি। পরে বাধ্য হয়ে নিজেরাই মেরামত করেছি। এ অবস্থায় একটি পাকা ভবন, টিউবওয়েল, টয়লেট ও একটি স্থায়ী শহীদ মিনার জরুরি ভিত্তিতে আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য প্রয়োজন।
এ বিষয়ে স্থানীয় আটপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, আটপাড়া উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। তবে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকায় এগুলো করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, তবে অনেক প্রতিষ্ঠান নিজেদের অর্থায়নেই স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করেছে। যেগুলোতে এখনও হয়নি তারা কলাগাছ বা বাঁশ-কাঠ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বলে শুনেছি। আমরা চেষ্টা করছি শহীদ মিনারহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচিরেই স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করতে।
Array