পাবনা প্রতিনিধিঃ আসন্ন দূর্গা পূজা উপলক্ষ্যে পাবনার চাটমোহরে প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিমার কাঠামো তৈরী, কাঠামোতে মাটিসহ অন্যান্য উপকরণ লাগানোর কাজ এখন পুরোদমে করছেন তারা। তাই যেন দম ফেলার মতো সময় নেই তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাটমোহরের নিমাইচড়া ইউনিয়নের বেলগাছি, বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথর ও পৌর সদরের বালুচর মহল্লাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কিছু প্রতিমা শিল্পী প্রতিমা তৈরী করেন। প্রতিমা তৈরীর উপকরণের উচ্চমূল্যের কারণে এখন তারা আগের মতো লাভ করতে না পারলেও কোন মতে টিকে আছেন এ পেশায়।
বেলগাছি গ্রামের প্রতিমা শিল্পী অমল পাল জানান, বেলগাছি গ্রামের চারটি পরিবার প্রতিমা তৈরীর কাজ করেন। দূর্গা, স্বরস্বতী, কালী, লক্ষী, মনসা, শিব ঠাকুর, বিশ্বকর্মা, গনেশসহ বিভিন্ন প্রতিমা তৈরী করেন তারা। যখন যেটা অর্ডার পান তখন সেটি তৈরী করে সরবরাহ করেন। তবে বর্তমান সময়ে দূর্গা পূজা আসন্ন হওয়ায় দূর্গা প্রতিমা তৈরীতেই ব্যস্ত তারা। এ বছর তিনি ৩২ টি দূর্গা প্রতিমার অর্ডার পেয়েছেন। কাঠামো তৈরী করে তাতে মাটি লাগানোর কাজ করছেন। তিনি আরো জানান, প্রতিমা তৈরীর উপকরণ খড়, বাঁশ, সুতলী, লোহা, রঙ, মাটি, ধানের তুষ, কাপড়সহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। আকার ভেদে এক একটি প্রতিমা ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। পাবনা ছাড়াও নাটোর, সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিমা কিনে নিয়ে যান। খুব বেশি লাভ করতে না পারলেও এ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে কোন রকমে দিনাতিপাত করছেন তারা।
অপূর্ব পাল জানান, এ বছর ১২ টি দূর্গা প্রতিমার অর্ডার পেয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে কাঠামো তৈরীর কাজ শেষ করেছেন। সনাতন পাল নামক অপর প্রতিমা শিল্পী ১০ টি দূর্গা প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন। তারা জানান, এঁটেল মাটি দুষ্প্রাপ্য হয়ে পরেছে। আগে মাটি কিনতে হতো না। এখন চড়া দামে মাটি কিনতে হয়। অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় তারা লাভ করতে পারছেন না। আবার পৈত্রিক পেশা ছাড়তেও পারছেন না। সব মিলিয়ে কোন রকমে টিকে আছেন তারা।
বোঁথর গ্রামের প্রতিমা শিল্পী সত্যেন চক্রবর্ত্তী জানান, এ বছর ১২ টি দূর্গা প্রতিমা তৈরীর কাজ শুরু করেছেন তিনি। এখন কাঠামো তৈরীর কাজ করছেন। আশা করছেন পূজার আগেই সবগুলো সরবরাহ করতে পারবেন। তিনি আরো জানান, চাটমোহরের প্রায় ৩৫ জন প্রতিমা শিল্পী শতাধিক দূর্গা প্রতিমা তৈরীর কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
চাটমোহর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অশোক চক্রবর্ত্তী জানান, এ বছর চাটমোহরের ৫২ টি মন্দিরে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনে তিনি সকলের সহায়তা কামনা করেছেন।