এক-এগারর কুশীলবরা বিএনপি-জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের দেশে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা।
বিএনপি ১০ দফা নিয়ে ও বিদ্যুতের মূল্য কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। অপরদিকে ‘বিএনপি-জামাতের জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপপ্রচার ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর বিভিন্ন প্রাপ্তে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সমাবেশ থেকে এক-এগার কুশীলবদের বিতাড়িত করার ঘোষণা এসেছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজিত সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিশ্ব সংকটেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এতে বিএনপির গায়ে জ্বালা ধরে। বিএনপি অশান্তি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য সমাবেশ করছে। অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাবেন, চিকিৎসা নেবেন। এটা নিয়ে তামাশা বা কটাক্ষ করার কিছু নেই। তবে অসুস্থ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, “তারা (বিএনপি) নির্বাচনে না এলে মনোনয়ন বাণিজ্য করবে কীভাবে? তারা ক্ষমতায় আসার জন্য নয়, শুধুমাত্র নির্বাচনে বাণিজ্য করতে সবাইকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।”
মায়া আরও বলেন, “আজকে বিএনপির নেতৃত্বে ৫৪টি দল রাজপথে আন্দোলন করছে। ৫৪টি কেন, ১০০টি দল করলেও শেখ হাসিনার কিছুই করতে পারবে না। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান আমাকে এক হাজার ৮০ দিন জেল খাটিয়েছিল। এটা কিছু না, রাজনীতি করতে গেলে জেল-নির্যাতন ও মামলা হামলার শিকার হতেই হবে।”
আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, “বিএনপি নেতারা বলেন পাকিস্তান, বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান থেকে পাকিস্তান ভালো ছিল। তাদের নেতারা বলেন, বাংলাদেশ বাইচান্স বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ বাইচান্স মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। এ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল না, এমন ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ তারা কথা বলেন। তাদের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা বিতাড়িত করতে না পারব, বাংলাদেশে শান্তি ফিরে আসবে না।”
নির্বাচনে না এলে বিএনপি হাওয়ায় বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনে আসুন। ওই যে আস্তে আস্তে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে কিছু দল। নির্বাচনে না এলে আপনারাও তাদের মতো হাওয়ায় মিলিয়ে যাবেন।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “ওরা (বিএনপি) হচ্ছে সাপ। যখনই সময়-সুযোগ পাবে তখনই ছোবল মারবে। তাই সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনে আগ পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।”
এদিকে রাজধানীর ফার্মগেট ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগ। সমাবেশে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি যেন মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে সেই জন্য প্রস্তুত থাকবেন। উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে চায় তারা। একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত ও নব্য রাজাকার বিএনপি আজ ষড়যন্ত্রে মেতেছে। এরা স্বাধীন দেশ চায় না। তাদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করে জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াই আমাদের লক্ষ্য।”
‘মুক্তিযুদ্ধ বাইচান্স’ গয়েশ্বরকে এমন বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান হানিফ। নতুবা জনতা রাজপথে বিচার করবে। মুক্তিযুদ্ধ বাইচান্স নয়, জিয়া বাইচান্স মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা বহু আন্দোলন ও আত্মত্যাগের ফসল।
সংবিধান নিয়ে কটূক্তির করে বিএনপি নেতা আবদুল আওয়াল মিন্টুর বক্তব্যে জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি তোলেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। নতুবা জনগণ রাজপথে উচিত শিক্ষা দেবে বলেও জানান তিনি। হানিফ বলেন, “জিয়া কখনও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, রাজাকারদের পুনর্বাসনসহ নিজের কর্মকাণ্ড দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন।’
Array