তীব্র শীতে জবুথবু ভারতের উত্তরাঞ্চলসহ দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলছে দিল্লি, পাঞ্জাবসহ উত্তর পশ্চিম ভারতে। ঠান্ডায় ঠকঠক করে কাঁপছেন সেই রাজ্যগুলোর বাসিন্দারা। এমনকি, প্রাণ কাড়তেও শুরু করেছে এই শীত। গত পাঁচ দিনে ঠান্ডায় হৃদ্রোগ এবং স্ট্রোকের কারণে শুধু উত্তরপ্রদেশের কানপুরেই মারা গেছেন ৯৮জন। তাদের মধ্যে ৪৪জন হাসপাতালে মারা যান এবং ৫৪জন মারা গেছেন চিকিৎসা না পেয়ে।
কানপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল এই পরিসংখ্যান দিয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের জরুরি ও বহির্বিভাগে ভর্তি হন মোট ৭২৩ জন ।
পরিসংখ্যানে আরও উল্লেখ রয়েছে, হাসপাতালে প্রচণ্ড ঠান্ডায় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার ১৪জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ছয়জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছেন। আটজনকে হাসপাতালে আনা হয় মৃত অবস্থাতেই। ওই হাসপাতালটিতে মোট ৬০৪জন হৃদ্রোগ আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছে কতৃপক্ষ।
এদিকে নয়ডার যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে কুয়াশার জন্য কম দৃশ্যমানতা কারণে পথদুর্ঘটনার কবলে পড়ে দুই নাবালক সহ আটজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহ থেকে রাজধানী দিল্লিসহ গোটা উত্তর ভারত জুড়ে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। এরমধ্যেই গত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই শীতলতম দিন দেখেছে দিল্লিবাসী। রবিবার দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এইসঙ্গে ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত সাধারণ জনজীবন। সামান্য দূরের জিনিসও দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত দিল্লির সব স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে দৃশ্যমানতার সমস্যায় ট্রেন, বাস, বিমান পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত কোনো উড়োজাহাজ ছাড়েনি। এছাড়া কুয়াশা বেশি থাকার কারণে দেরিতে ছেড়েছে ৪২টি ট্রেন। এই অবস্থায় দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বেশকিছু জায়গায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, গত সপ্তাহ থেকে দিল্লি, পাঞ্জাব, চণ্ডীগড়, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশের কিছু অংশে তাপমাত্রা তিন থেকে ছয় ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।
অন্যদিকে সবচেয়ে অস্বাভাবিক ঠান্ডা পড়েছে রাজস্থানে। রাজস্থানের বেশকিছু জায়গায় হিমাঙ্কের নিচে পৌঁছায় তাপমাত্রা। রাজস্থানের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ি এলাকা মাউন্ট আবুতে বরফ পড়েছে। থর মরুভূমির প্রবেশপথ বলে পরিচিত চুরুতে তামমান এখন শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সূত্র: আনন্দবাজার
Array