চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আমরণ অনশন করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীরা। সোমবার (০২ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। তবে অনশনের ৩২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছয় জন ও চতুর্থ শ্রেণির ১৪৯ জন কর্মচারী ‘দৈনিক মজুরি’ ভিত্তিতে কর্মরত আছেন। ইউজিসির অনুমোদন না থাকায় তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে গতকাল বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে অনশনকারীদের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দল সভায় বসে। তবে এতে কোন স্থায়ী সমাধান মেলেনি। অনশনকারীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খালি পদ গুলোতে নতুন করে আবেদনের মাধ্যমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগের মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে তারা লিখিতভাবে স্থায়ী কোন আশ্বাস দেন নি। স্থায়ী আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবার কথা জানান।
এদিকে তীব্র শীতে ও অনাহারে অনশনকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫ জন অসুস্থ হয়ে জাবি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছে এবং একজনকে গুরুতর অবস্থায় সাভারের একটি বেসরকারী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।
অনশন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের অফিস সহকারী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ আমি ২০১৭ সালে চাকরিতে জয়েন করি। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাকরি স্থায়ীকরণের কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। দীর্ঘদিন চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরা আন্দোলনও করছি। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের স্থায়ী কোন আশ্বাস দেওয়া হয় নি। এখন আমাদের পক্ষে আর ধৈর্য ধরা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা অনশনে বসেছি।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের হল এটেনডেন্ট রাজিয়া আক্তার বলেন, ‘চাকরির বয়স দীর্ঘ ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের চাকরি স্থায়ী করা হয় নি। দীর্ঘ একটা বছর প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন ভাবে আমাদের দাবী জানিয়েও স্থায়ী কোন আশ্বাস মেলে নি। তাই আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। আমাদের দাবী না মানা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
এর আগে, সোমবার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ( ইউজিসি) দিল আফরোজা বেগম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ছয়টি হল পরিদর্শনে আসলে আন্দোলনকারীরা তার কাছে তাদের দাবি তুলে ধরেন। এসময় তিনি তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা জানতে উপাচার্যের সাথে সাংবাদিকরা সাক্ষাত করতে গেলে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব এসে জানান তিনি ব্যস্ত থাকায় আজ সময় দিতে পারবেন না।
Array