আশিকুর রহমান হৃদয়।।
নরসিংদী থেকে ঢাকায় আসা কৃষক জাকির হোসেন বলেন, একটু লাভের আশায় সবজি নিয়ে গ্রাম থেকে শহরে আসি; কিন্তু থলিতে এখন খুচরা পয়সা। পণ্য বহন খরচ আর যাতায়াত ভাড়া তুলতে পারব কি না- সন্দেহে আছি।
গতকাল সোমবার কারওয়ান বাজারে সবজি নিয়ে আসা কয়েকজন কৃষক জানান, উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা কম আছে এটা সত্য। তবে রাজধানীর এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী আছে তারাই মূলত বাজারে বিভিন্ন ধরনের সংকট সৃষ্টি করে। এতে লোকসান নিয়ে ঘরে ফিরতে হচ্ছে বলেও তারা জানান।
রাজধানীর কাঁচা পণ্যের পাইকারি বাজারগুলোর মধ্যে কারওয়ান বাজার অন্যতম। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সবজি নিয়ে এ বাজারে আসেন এলাকার ব্যবসায়ী ও গ্রামের কৃষকরা। লাভের প্রত্যাশায় রাজধানীতে আসলেও শীতকালীন সবজির চাপ ঢাকায় বেশি থাকায় নিম্নদামে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু এ সব সবজি কম দামে কিনলেও ব্যবসায়ীরা রাজধানীর খুচরা বাজারে অধিক দামে বিক্রি করছে। এই ধরনের দামের মারপ্যাঁচের পিছনে রাজধানীর বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট আছে বলেও জানা গেছে।
অন্যদিকে রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যে সবজি কৃষকের নিকট থেকে রাজধানীর ব্যবসায়ীরা ১০ টাকায় কিনছে, এক-দুই মাইলের মধ্যেই আবার সেই সবজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করছে। এই বিষয়ে যাত্রাবাড়ী বাজারের এক ব্যবসায়ী ইয়াকুব বেপারী বলেন, কাঁচা সবজি বিক্রির ক্ষেত্রে সব দোকান মিলে একটি দাম ঠিক করে। সেই হিসাবেই আমাদের সবজি বিক্রি করতে হয়। এছাড়া আরো চারটি খুচরা বাজার থেকেও এই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে।
ঢাকার বিভিন্ন বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, মূলা পাইকারিতে ২০ টাকা; বেগুন ৪০-৫০ টাকা; টমেটো ৮০ টাকা; গাজর ৪০ টাকা; শশা ৩০ টাকা; ঝিঙ্গা ৪২ টাকা; করলা ২২ টাকা; শালগম ৩০ টাকা এবং শিম ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা আর কাঁচকলা হালি ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি কুমড়া ২০ টাকা, লাউ ৩৫ টাকা, চাল কুমড়া ৩০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ১০ টাকা, আলু ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারিতে এ দামে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে প্রায় সব সবজির দাম পাইকারি বাজারের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। অর্থাৎ কৃষকরা ক্ষতি নিয়ে ফিরলেও পাইকার এবং খুচরা বিক্রেতারা কয়েকগুণ বেশি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
Array